রবিবার সাত সকালে ঘটে গেল এক ভয়ঙ্কর পথদুর্ঘটনা। যাত্রিবাহী একটি ট্রেকার ও ডাম্পারের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন অন্তত পাঁচ জন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। তাঁদের মধ্যে তিন জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। মুর্শিদাবাদের কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের গোকর্ণ পাওয়ার হাউস মোড়ে। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে দুই জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়।
আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বাসে তীব্র গতিতে সজোরে লরির ধাক্কা, হাওড়ার বাগনানে মৃত ২, আহত ২৬
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ বীরভূম জেলার বেলে এলাকা থেকে একটি যাত্রীবোঝাই ট্রেকার মুর্শিদাবাদের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটিতে ছিলেন মোট ২০ জন। প্রত্যেকেই কোনও ধর্মীয় কাজে অংশ নিয়ে ফেরার পথে ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। সেই সময় গোকর্ণ পাওয়ার হাউস মোড়ের কাছে আচমকা একটি ডাম্পারের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে ট্রেকারটির। ধাক্কা এতটাই জোরালো ছিল যে, ট্রেকারটি রাস্তায় উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচ জনের, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন গাড়ির চালক ও তিন জন মহিলা। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে ছুটে গিয়ে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। পরে পুলিশ ও অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কয়েক জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে যাঁরা গুরুতর জখম হয়েছেন, তাঁদের ভর্তি রাখা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অন্তত তিন জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সবাই পুণ্যস্নান করে বাড়ি ফিরছিলেন। খুবই আস্তে যাচ্ছিল ট্রেকারটা। হঠাৎ একটা ডাম্পার এসে সজোরে ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার পর কিছু সময়ের জন্য থমকে যায় রাজ্য সড়কে যান চলাচল। তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ও আহতদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই কয়েক জনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা গিয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে ছুটে গিয়েছেন। স্থানীয় থানার এক আধিকারিক জানান, ডাম্পারটি কীভাবে ট্রেকারের সামনে এল, চালক কি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন, নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ডাম্পারের চালক ও মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনা ফের একবার রাজ্যের গ্রামীণ রাস্তাগুলিতে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই গাড়ি চলাচল ও বেপরোয়া ডাম্পার চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু দিন ধরেই ওই মোড়ে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না। তারা দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।