বুধবার সকাল সকাল হুগলির উত্তরপাড়ায় ঘটল এক ভয়াবহ কাণ্ড। ভদ্রকালী এলাকার একটি ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হল একই পরিবারের তিন সদস্য। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় বছর পঁচিশের পায়েল চট্টোপাধ্যায় এবং তার চার বছরের কন্যা অদ্রিজাকে। পরিবারের কর্তা তথা পায়েলের স্বামী কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, স্ত্রী, শিশু কন্যাকে খুন করার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কাশীনাথ।
আরও পড়ুন: কলকাতার ফ্ল্যাটে নিহত বাংলাদেশি MP আনারকাণ্ডে নয়া তথ্য! উদ্ধার হল…
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার একটি বাড়িতে স্ত্রী পায়েল এবং শিশুকন্যা অদ্রিজার সঙ্গে থাকতেন কাশীনাথ। পুলিশ জানিয়েছে, শরীরেও একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকার পাশাপাশি তিন জনের গলাতেই ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন রয়েছে। তিন জনকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পায়েল এবং শিশু কন্যাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কাশীনাথকে পাঠানো হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত উত্তরপাড়া থানার অধীনে থাকা ওই বাড়িটি আপাতত পুলিশ তদন্তের জন্য ঘিরে রেখেছে। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনায় একাধিক দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিশ, খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিবারের ইতিহাসও। তবে প্রাথমিক অনুমান, পারিবারিক অশান্তির ফলেই ঘটে থাকতে পারে এই ভয়াবহ কাণ্ড। পুলিশের সন্দেহ, কাশীনাথ নিজেই স্ত্রী ও কন্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করে পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ফল কাটার ছুরি। ইতিমধ্যেই সেই ছুরি উদ্ধার করে ফরেনসিকের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের মানসিক অবস্থা ও আর্থিক অবস্থাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে তদন্তে। ঘরের দরজা বন্ধ ছিল কি না, কেউ ভিতরে ঢুকে এমন কাণ্ড ঘটাল সে বিষয়টিও পুলিশ খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনার জেরে এলাকায় থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। প্রতিবেশীদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। যদিও কী কারণে এমন ঘটনা? তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, পারিবারিক টানাপোড়েন বা অশান্তির জেরে এমনটা ঘটে থাকতে পারে। ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।