তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালকের চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা স্থানীয় একটি আশ্রমের সাধুবাবা যিনি অনন্ত বাবা নামে পরিচিত তার কাছে জানিয়েছিলেন। তখন সাধুবাবা নিদান দিয়েছিলেন, চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে গেলে একটাই উপায় রয়েছে।
নাবালক ছেলেকে দামোদরের চরে পুঁতে রাখার অভিযোগ। প্রতীকী ছবি
নাবালক ছেলে অত্যন্ত চঞ্চল হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন বাবা-মা। তারা চাইছিলেন চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে। এর জন্য স্থানীয় এক সাধুবাবারও দ্বারস্থ হন তারা। শেষে সাধুবাবার নিদানে চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে শুনশান, নিশুতি রাতে নদীর বালির চরে পুঁতে রাখল বাবা মা। এমনই অমানবিক এবং মধ্যযুগীয় ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের রায়নাতে। এই ঘটনায় নাবালকের বাবা, মা এবং দাদুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গেই নাবালককে আপাতত হোমে রাখা হয়েছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালকের চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা স্থানীয় একটি আশ্রমের সাধুবাবা যিনি অনন্ত বাবা নামে পরিচিত তার কাছে জানিয়েছিলেন। তখন সাধুবাবা নিদান দিয়েছিলেন, চঞ্চল ছেলেকে শান্ত করতে গেলে একটাই উপায় রয়েছে। সেটা হল শুনশান রাতে দামোদরের চরে হাঁটু পর্যন্ত তাঁকে পুঁতে রাখতে হবে। তবেই ছেলে শান্ত হবে। সাধুবাবার সেই নিদান অন্ধভাবে বিশ্বাস করে নেন নাবালকের অভিভাবকরা। সেই মতো ওই নাবালককে শুনশান রাতে দামোদরের চরে নিয়ে গিয়ে হাঁটু পর্যন্ত পুঁতে দেন নাবালকের বাবা অর্কদ্যুতি বিশ্বাস এবং মা সুস্মিতা বিশ্বাস। তাদের সেই কাজে সাহায্য করেছিলেন নাবালকের দাদু সুব্রত জোয়ারদার। কিন্তু, নাবালক একা থাকলে যে বড় বিপদ ঘটতে পারে সেই কথা না ভেবেই তাকে বালির চরে পুঁতে রেখে তারা বাড়ি চলে আসেন। এরই মধ্যে রাত বাড়তে থাকায় নাবালক প্রচন্ড ভয় পেয়ে যায়। কোনওভাবে বালি থেকে পা তুলে সেখান থেকে কাঁদতে কাঁদতে গ্রামে পালিয়ে আসে ওই নাবালক। তার কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে বেড়িয়ে আসেন স্থানীয়রা। তারা তাকে জিজ্ঞেস করতেই জানতে পারেন আসল ঘটনা।