মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অশান্তির প্রভাব পড়ল শিক্ষাক্ষেত্রেও। গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হলেও ধুলিয়ান পুরসভা এলাকার একাধিক স্কুলে এখনও ক্লাসই শুরু হয়নি। কারণ, ওই সমস্ত বিদ্যালয় এখন কার্যত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে। ক্লাসরুম থেকে শুরু করে অফিস ঘর প্রায় প্রতিটি স্থানই বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করছে। ফলে স্কুলে গিয়ে ফিরছে পড়ুয়ারা। তাতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: ধুলিয়ান হিংসায় জড়িত নই, বরং আক্রান্তদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছি: মেহেবুব আলম
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী জুলাই পর্যন্ত বাহিনী মোতায়েন চালু থাকবে। ফলে ওই সময়ের মধ্যে নিয়মিত ক্লাস চালানো আদৌ সম্ভব হবে কি =না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ুয়া, অভিভাবক ও শিক্ষক মহল। সূত্রের খবর, ধুলিয়ান শহরের অন্তর্গত কৃষ্ণকুমার সন্তোষকুমার স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়, বাণীচাঁদ আগরওয়াল বালিকা বিদ্যালয়, দিঘরি হাইস্কুল ও ধুলিয়ান হাই-মাদ্রাসা-সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই অবস্থান করছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা।
অন্যদিকে, কাঞ্চনতলা জেডিজে ইনস্টিটিউশনে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের প্রতিনিধিরা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী যে ঘরগুলি দখল করে রেখেছেন, তা শুধু ক্লাসরুমেই সীমাবদ্ধ নয়। অফিস কক্ষ, স্টাফ রুম, এমনকী শৌচালয় পর্যন্ত ব্যবহার করছেন তাঁরা। ফলে স্বাভাবিক পরিবেশে ক্লাস নেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গেছে, শেষবার মার্চ মাসে নিয়মিত পঠনপাঠন চলেছে এসব স্কুলে। এরপর ওয়াকফ আন্দোলনকে ঘিরে ধুলিয়ান এলাকায় হঠাৎ করে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোতায়েন করা হয় বাহিনী। ফলে তখন থেকেই বিদ্যালয়গুলিতে বন্ধ হয়ে যায় পাঠদান। তারপর আসে গরমের ছুটি। ছুটি শেষে গত সোমবার (৩ জুন) থেকে রাজ্যের অন্যান্য স্কুলে ক্লাস শুরু হলেও ধুলিয়ানে সেই চিত্র দেখা যায়নি।
জঙ্গিপুর মহকুমা স্কুল পরিদর্শক সন্দীপ কোড়া জানান, বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আপাতত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস স্কুলের বাইরে খোলা অংশে চালু রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছেন, নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কাঞ্চনতলা স্কুলের শিক্ষকরা যদিও পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তৃতীয় তলার কয়েকটি ফাঁকা ঘরে ক্লাস চালু করার চেষ্টা করছেন, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও অনুকূল নয়। কেকেএসকে স্মৃতি বিদ্যাপীঠেরও শুধু ক্লাসরুম নয়, স্টাফরুমও দখলে। শিক্ষকদের বসারও কোনও জায়গা নেই।একই অবস্থা ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়ের। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী অন্যত্র সরিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি দ্রুত স্বাভাবিক করার দাবি তুলছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়ারা।