বিলাসবহুল জীবনযাপন তিনি কোনওদিনই চাননি। অথচ শারীরিক অসুস্থতার কারণে শহরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে। সেখানে অনেক নিয়মের বেড়াজালে খানিকটা হলেও বাড়তি খাতিরযত্ন হচ্ছে। কারণ একদিকে তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছেন। এই আবহে এখন সংকটমুক্ত না হলেও অনেকটা সুস্থ। তাই চিকিৎসকদের কাছে তাঁর আর্জি, ‘এবার আমাকে ছেড়ে দিন।’ কিন্তু ছেড়ে দিতে বললেই তো ছেড়ে দেওয়া যায় না। চিকিৎসার তো একটা নিয়ম আছে। সেটাই বোঝানো হচ্ছে বুদ্ধবাবুকে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে ধীরে ধীরে আতঙ্কের প্রহর কেটে গিয়েছে। আজ কেমন আছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য? জানতে চাইছেন রাজ্যের মানুষজন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আজ বুধবার আগের থেকে অনেকটা ভাল আছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে। আগেরদিন রাতেও বাইপ্যাপ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। তাঁর শরীরে কার্বন–ডাই–অক্সাইডের মাত্রা কমেছে এবং বেড়েছে অক্সিজেন মাত্রা। যা একটা ভাল খবর। চিকিৎসকরা আশা করছেন, তিনি ধীরে ধীরে সুস্থতার পথেই এগোচ্ছেন। শনিবার দিন তিনি ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। সেদিন থেকে ধরলে আজ পর্যন্ত পাঁচদিন হয়ে গেল। আর হাসপাতালে মন টিকছে না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের।
অন্যদিকে ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে মারাত্মক সংক্রমণ নিয়ে আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে শনিবার ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তাঁকে ‘ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে’ রাখতে হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী ক্ষেত্রে ভেন্টিলেশন থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়। এখন আগের চেয়ে অনেকটা ভাল আছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। আর এটুকু সুস্থ হয়েই এখন বাড়ি ফিরতে চাইছেন তিনি। তাই তো তিনি চিকিৎসকদের এবং যেসব ঘনিষ্ঠজন দেখতে আসছেন তাঁদেরকে বলছেন, ‘আমাকে এবার ছেড়ে দিন।’ আজ কয়েকটি পরীক্ষার জন্য রক্তের নুমনা পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট আজই এসে পৌঁছবে। তার পর ১২টা নাগাদ মেডিক্যাল বোর্ড বসবে বৈঠকে। আজকের মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে থাকার কথা দুই সিপিএম নেতা বিমান বসু এবং সূর্যকান্ত মিশ্রের। চিকিৎসকরা তাতে সম্মতি দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: রেললাইনে ধস নেমেছে, শিয়ালদা–নৈহাটি শাখায় বিপর্যস্ত ট্রেন চলাচল, যাত্রী দুর্ভোগ
আর কী বলছেন বুদ্ধবাবু? রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন চিকিৎসকরা বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এই আবহে চিকিৎসকদের কাছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হোক। আমি বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ফিরতে চাই।’ কিন্তু আগামীকাল বৃহস্পতিবার অ্যান্টিবায়োটিকের ‘কোর্স’ শেষ হবে। তারপর পর্যালোচনায় বসবে মেডিক্যাল বোর্ড। সবটা খতিয়ে দেখা হবে। পাঁচ দিনের অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্সের পর কেমন আছেন বুদ্ধদেববাবু। সেটা দেখা হবে। সুতরাং এখনই তিনি ফিরতে পারছেন না পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে।