এই সাফল্যের পরে কেকেআরের সোশ্যাল মিডিয়া টিম ট্র্যাভিস হেডকে নিয়ে বেশ মজা করতে থাকে। নিজেদের এক্স (টুইটার)-এ হেডের দুর্দশা তুলে ধরে বিশেষ পোস্ট করে, ছবিও পোস্ট করা হয়। যেখানে ট্র্যাভিস হেড কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে কত স্কোর করেছিলেন সেটাই দেখান হয়েছে।
SRH তারকাকে নিয়ে KKR-এর কটাক্ষ (ছবি : AP)
যদি এমন একটি তালিকা তৈরি করা হয় যেখানে সেইসব ক্রিকেটারদের নাম থাকবে যারা ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে, তাহলে ট্র্যাভিস হেড সেই তালিকার শীর্ষ স্থানে থাকবেন। এতে কোনও সন্দেহ নেই। অস্ট্রেলিয়ার এই ওপেনার সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ফরম্যাটে ভারতের কাঁটা হয়ে উঠেছেন। তিনি প্রায় একক দক্ষতায় ২০২৩ সালে ভারতের কাছ থেকে দুটি আইসিসি ট্রফি ছিনিয়ে নিয়েছেন। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল এবং ওডিআই বিশ্বকাপ ফাইনালে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
বর্ডার গাভাসকর ট্রফিতেও ভারতকে ভোগান্তিতে ফেলেছিলেন ট্র্যাভিস হেড। তবে একটি ভারতীয় আইপিএল দলই ট্র্যাভিস হেডকে বারবার আটকে দিয়েছে এবং রান করতে দেয়নি। সেই দলের নাম কলকাতা নাইট রাইডার্স। বিশ্বজুড়ে খুব একাধিক দলই যা করতে পারেনি, সেটাই করে দেখিয়েছে কেকেআর। ট্র্যাভিস হেডকে বারবার আটকে দিয়েছে রান করতে দেয়নি।
গত তিনবার কেকেআরের বিরুদ্ধে হেডের স্কোর হল ০ (২ বল), ০ (৪ বল), ৪ (২ বল)। আইপিএল ২০২৪-এর কোয়ালিফায়ার ১-এ হেডকে বোল্ড করেছিলেন তাঁর অস্ট্রেলীয় সতীর্থ মিচেল স্টার্ক। কয়েক রাত পর, ফাইনালে তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বৈভব আরোরা। আইপিএল ২০২৪-এর ফাইনালে মাত্র চার বল খেলে শূন্য রানে ফিরেছিলেন ট্র্যাভিস হেড। আর ৩ এপ্রিল, ২০২৫-এ ইডেন গার্ডেন্সে আবারও হেডকে দ্রুত ফেরত পাঠালেন সেই বৈভব আরোরা।
ট্র্যাভিস হেডকে KKR-এর কটাক্ষ
এই সাফল্যের পরে কেকেআরের সোশ্যাল মিডিয়া টিম ট্র্যাভিস হেডকে নিয়ে বেশ মজা করতে থাকে। নিজেদের এক্স (টুইটার)-এ হেডের দুর্দশা তুলে ধরে বিশেষ পোস্ট করে তারা লেখে, ‘Head-ing towards the business, right from the start।’ এই বলে ট্র্যাভিস হেডের একটি ছবিও পোস্ট করা হয়। যেখানে ট্র্যাভিস হেড কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে কত স্কোর করেছিলেন সেটাই দেখান হয়েছে।
এই পোস্ট মিশ্র প্রতিক্রিয়া টানে। কেউ প্রশংসা করেন কেকেআর বোলারদের, আবার কেউ প্রতিপক্ষকে ট্রল করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সমালোচনা করেছেন।
২০১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে হায়দরাবাদ ওপেনার হেড প্রথম বলেই একটি সৌভাগ্যবান চার মেরে ইনিংসের শুরু করেন। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না থেকেও বল ব্যাটে লেগে মিড অফে হর্ষিত রানার মাথার ওপর দিয়ে চার হয়ে যায়। কিন্তু বৈভব আরোরা পরিকল্পনা বদলাননি। পরের বলটিও ছিল একইরকম ফুল ও অফ-সাইডে সরে যাওয়া বল। হেড আবারও ফ্রন্ট ফুটে গিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন, এবার বল রানার নাগালে থেকে যায়, যিনি দুর্দান্ত ক্যাচ নেন।
বৈভব তখন চূড়ায়। পরের ওভারে এক ডাইভিং ক্যাচে অজিঙ্ক রাহানে ফিরিয়ে দেন ইশান কিষানকে। পরে আন্দ্রে রাসেল সহজ একটি ক্যাচ ফেলে না দিলে কমিন্দু মেন্ডিসের উইকেটও পেয়ে যেতেন বৈভব।
এসআরএইচ-এর জন্য সমস্যা আরও বাড়ায় অভিষেক শর্মার ব্যর্থতা। তিনি হর্ষিত রানার স্লোয়ার ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দেন। এরপর বৈভব আবার ফিরে এসে সর্বোচ্চ রান করা এনরিখ ক্লাসেনকে (৩৩) ফেরান এবং শেষ করেন দুর্দান্ত ৩/২৯ ফিগারে।
সুনীল নারিন ও বরুণ চক্রবর্তীর স্পিনে মিডল অর্ডার দমে যায়। ঘরের মাঠে অনুকূল কন্ডিশনে তাঁরা নিখুঁত বোলিং করেন। নারিন কেকেআরের হয়ে আইপিএলে ২০০ উইকেট পূর্ণ করেন, মেন্ডিসকে মিড-উইকেটে ক্যাচ ধরিয়ে (২৭)। ফলে কেকেআর হায়দরাবাদকে ১৬.৪ ওভারে মাত্র ১২০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৮০ রানের বিশাল জয় পায়। এর আগে ব্যাট হাতে কেকেআরের হয়ে অংকৃষ রঘুবংশী ৩২ বলে ৫০ এবং বেঙ্কটেশ আইয়ার ২৫ বলে অর্ধশতক করেন, যার ফলে দল তোলে ২০০/৬।