ভোট আসে যায়, রাজনৈতিক নেতারা প্রতিশ্রুতিও দেন। কিন্তু, তাতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। ফলস্বরূপ তিন দশক ধরে রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। কোনওভাবে বেসরকারি একটি সংস্থার বিদ্যুতেই চলে বাড়ির লাইট, ফ্যান। কিন্তু, কম ভোল্টেজের কারণে তাতে যেমন পাখার ঘোরে শামুকের গতিতে আবার রাতে বাল্বের আলোয় অন্ধকারও সেভাবে কাটে না। তবে প্রতিবার জেনারেটর চালিয়ে ভোট করা হয়। এই অবস্থায় ভোটের ঠিক আগের দিন বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী মহিলারা। ঘটনাটি আসানসোলের জামুড়িয়ার জানবাজার এলাকার। এদিন তারা বুথে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে, ২ সংস্থাকে নির্দেশ মন্ত্রীর
বিক্ষোভকারী মহিলাদের বক্তব্য, ভোটের সময় কোনওভাবেই জেনারেটর চলতে দেওয়া হবে না। এই অবস্থার মধ্যেই ভোট গ্রহণ করতে হবে। এই দাবি নিয়ে বুথের বাইরে বিক্ষোভ করেন আদিবাসী মহিলারা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৪৩ নম্বর বুথে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩ দশক ধরে তাদের গ্রামে রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ নেই। ভোটের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং সরকারি আধিকারিকরা বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু, এবার গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আর প্রতিশ্রুতিতে কাজ হবে না।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, নির্বাচনের জন্য জেনারেটর নিয়ে এসে ভোট গ্রহণ করা হয়। কিন্তু, নির্বাচন মিটলেই জেনারেটর তুলে নিয়ে চলে যায়। অথচ কম ভোল্টেজের কারণে বছরের পর বছর গরমে হাঁসফাঁস করতে গ্রামবাসীদের। তাই ভোট কর্মীদেরও গ্রামবাসীদের মতোই গরমে ভোট করাতে হবে। এদিন বুথের গেটে তালা মেরে দেন গ্রামবাসীরা।
এলাকার মহিলারা জানান, তাদের ভোট দিতে আপত্তি নেই। তবে তারা গত তিন দশক ধরে যেভাবে কষ্ট ভোগ করছেন সেই কষ্ট উপলব্ধি করতে হবে ভোট কর্মীদের।জানবাজারের স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘ইসিএলের বিদ্যুতে কোনওভাবে চলে। তবে লো ভোল্টেজ থাকায় গরমে বাচ্চাদের পড়াশোনা করতে হয়। রাতের বেলায় অন্ধকারে তারা পড়তে পারে না। আমরা চাই আমরা যে কষ্ট ভোগ করি সেটুকু অন্তত বুঝুক ভোকর্মীরা। আমরা ভোট বয়কট করছি না। ভালো করে ভোট হোক। কিন্তু, আমাদের সমস্যার সমাধান হোক।’ এনিয়ে বুথের সামনে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছয়। পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নমবলমের আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।