লোকসভা নির্বাচন শুরু হয়ে গিয়েছে। চলছে জোরদার প্রচার। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই নিজেদের বক্তব্য মানুষের সামনে তুলে ধরছে। কারণ ভোটটা তো মানুষকেই দিতে হবে। তাঁরাই গণদেবতা। কিন্তু এই গণদেবতারা এখন বাঘের ভয় পাচ্ছেন। হ্যাঁ, সুন্দরবন এলাকায় যে সব বুথ পড়েছে সেখানে বাঘের আগমন হতেই পারে। তখন তাহলে কী হবে? উঠছে প্রশ্ন। সুন্দরবনের লাহিড়ীপুর, জমেশপুর, কুমিরমারি, ছোট মোল্লাখালি এবং ঝড়খালি গ্রামগুলিতে বাঘের আনাগোনা আছে। বহু মৎস্যজীবী এখানের নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের পেটে গিয়েছে। কিন্তু এখন লোকসভা নির্বাচন এসে গিয়েছে। তাই ভোট তো এখানেও হবে। তাই আতঙ্ক আছে।
এই আতঙ্ক কাটাতে এবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই গ্রামগুলির অন্তর্গত বুথগুলির সংলগ্ন জায়গায় এবার নাইলন দড়ির নেট লাগানো হচ্ছে। যাতে বাঘ সহজে ঢুকতে না পারে। আর অযথা গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে না পড়েন। নির্ভয়ে ভোট যাতে সবাই দিতে পারে তাই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখানের জঙ্গলে বাঘ থাকে। তাই ভোটগ্রহণ পর্ব চলাকালীন বাঘমামার আবির্ভাব ঘটলে তা মানুষের জীবনে বিড়ম্বনা নিয়ে আসবে। এই কারণে নাইলনের দড়ি দিয়ে বানানো নেট এখন লাগানো হচ্ছে। এখানে ভোট রয়েছে ১ জুন। অর্থাৎ সপ্তম দফায়। এখানে ৫৭টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। তাই আগাম বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘ও থাকলে হয়তো আরও ভাল ফল করতাম’, যাদবপুর কাণ্ডে হারানো দাদার স্মৃতি আঁকড়ে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ভাই
এখানে ভোটকেন্দ্রগুলি গ্রামের মধ্যে হলেও জঙ্গল লাগোয়া। তাই একটা ভয় কাজ করে থাকে। এখানে গোসাবা এবং কুলতলি জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এখানে পাঁচ লাখ ভোটার আছে। তাঁরা ভোট দিতে আসবেন। তবে এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলি জঙ্গল লাগোয়া। সুতরাং সেখানে বাঘ আছে। এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলির ভোটার লোকসভা নির্বাচনের ভোট দিতে আসবেন। সেখানে যদি দক্ষিণরায় হাজির হয় তাহলে ভোট দেওয়া মাথায় উঠবে। ২০২৩ সালে যে বাঘসুমারি হয়েছিল তাতে উঠে এসেছে, এখানে ১০১টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে। সুতরাং ভোট দিতে আসা মানুষজন যাতে বাঘের মুখোমুখি না হয় তার জন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এছাড়া গোটা লোকসভা কেন্দ্রে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হচ্ছে। তার সঙ্গে বাঘের বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়তি নিশ্ছিদ্র ঘেরাটোপ করা হচ্ছে। আতঙ্কিত না হয়ে মানুষ যাতে এখানে ভোট দিতে আসেন তার জন্য প্রচারও করা হচ্ছে। এই বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জাস্টিন জোনস বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনের জন্য সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কড়া নজরদারি থাকছে সর্বত্র। আর ১২ কিমি রাস্তা জুড়ে নাইলন দড়ির ফেনসিং করা হচ্ছে। আরও অতিরিক্ত ৯২ কিমি রাস্তা ফেনসিং করার কাজ হবে।’