দেশজুড়ে মলদ্বীপ বয়কটের ডাক। সকলের একটাই বক্তব্য মলদ্বীপ নয়, ভারতীয়দের গন্তব্য হোক লাক্ষাদ্বীপ। বলিউড তারকা থেকে ক্রিকেট তারকাদের অনেকেই এবিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছেন। আর এবার সেই সুরে সুর মিলিয়ে এবার মলদ্বীপ বয়কটের ডাক দিল FWICE (Federation Of Western India Cine Employees)। এবিষয়ে বিবৃতি জারি করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে FWICE-র সভাপতি বিএন তিওয়ারি।
সিনে দুনিয়ার সকল প্রযোজক, অভিনেতাদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘আমরা চাই আমাদের সকল প্রযোজক, অভিনেতারা মলদ্বীপ বয়কট করুক। তা সেটা শ্য়ুটিং হোক কিংবা ছুটির দিন। এর কারণ, যে কেউ আমাদের অপমান করবে সেটা সহ্য করা যায় না। FWICE দেশের প্রধানমন্ত্রী ও জাতির সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ। আমরা দেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এমন অবমাননা সমর্থন করি না। মলদ্বীপের মন্ত্রীর এধরনের মন্তব্য হাস্যকর, দায়িত্বজ্ঞানহীন। আর তাই সমস্ত প্রযোজকদের কাছে আমাদের এই আবেদন মলদ্বীপে কোনও ছবির শ্যুটিংয়ের পরিকল্পনা করবেন না। পরিবর্তে ভারতের অনুরূপ কোনও জায়গা বেছে নিন। আমরা নিশ্চিত এই বয়কটের ফলে মলদ্বীপের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আর পর্যটন ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ প্রভাব পড়বে। দেশের পর্যটনেরও বিকাশ হবে।’
প্রসঙ্গত, ভারত-মলদ্বীপ দিপাক্ষিক সম্পর্কের ছবিটা কয়েকমাস আগেও এতটা খারাপ ছিল না। সেদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ভারতপন্থী। ইব্রাহিম মহম্মদ সোলির আমলে তাই দুই দেশের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন মলদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেসময় দুই দেশের মধ্যে এই মর্মে চুক্তি ছিল মলদ্বীপের জলসীমায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালাবে ভারতীয় নৌসেনা। এছাড়াও মলদ্বীপ ভারতীয় সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। ১৯৬৫ সালে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মলদ্বীপের প্রতি বারবার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ভারত। সেদেশের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা, মলদ্বীপের জন্য অনেককিছুই করেছে ভারত। প্রতিবছর বহু পর্যটক মলদ্বীপ ছুটি কাটাতে যান।
তবে পরিস্থিতি বদলে যায় মলদ্বীপের চিনপন্থী মহম্মদ মুইজু প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। তিনি স্থানীয়দের মধ্যে এই ধারনা ঢুকিয়ে দেন মলদ্বীপে প্রভাব বিস্তার করছে ভারত। এরপরই সেখানে ভারতীয়দের প্রতি বিদ্বেষ বাড়তে থাকে। এমনকী মলদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর দাবি ওঠে। এছাড়াও নানান ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতি হয়।