ঘুষ কাণ্ডে গৌতম আদানি ও সাগর আদানিকে তলব নোটিশ পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তাষ্ট্রের সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন। আমদাবাদে শান্তিবন ফার্মে গৌতম আদানির বাড়িতে এবং বোড়াকেভে সাগর আদানির বাড়িতে এই তলব নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২১ নভেম্বর এই নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। ২১ দিনের মধ্যে তাতে সাড়া দিতে বলা হয়েছিল আদানিকে। তবে জানা যাচ্ছে, মার্কিন সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন হুট করে এভাবে সরাসরি আদানিকে নোটিশ পাঠিয়ে তলব করতে পারে না। আর এর নেপথ্যে রয়েছে ভারত-মার্কিন চুক্তি। (আরও পড়ুন: মার্কিন আদালতের পর এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে মামলা আদানির বিরুদ্ধে)
আরও পড়ুন: ভারতের তেল রফতানি বেড়েছে ৬৩.৭ মিলিয়ন টন, তবে পকেটে ৫.৩ বিলিয়ন ডলার কম ঢুকেছে!
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ১৯৬৫ সালের হ্যাগ কনভেনশন এবং ভারত-মার্কিন পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তির ফলেই আদানিকে এভাবে হুট করে তলবের নোটিশ পাঠাতে পারে না মার্কিন প্রশাসন। বিদেশি কোনও নাগরিককে এভাবে তলবের নোটিশ পাঠানোর এক্তিয়ার নেই সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশনের। আমেরিকায় ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে এই তলবের নোটিশ পাঠাতে হত মার্কিন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে। (আরও পড়ুন: ৩০০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে শেষ COP29, 'বিশ্বাসের অভাব', গর্জে উঠল বিদ্রোহী ভারত)
আরও পড়ুন: ডিএ নিয়ে বাংলার সরকারি কর্মীদের বড় বার্ত দিতে উদ্যোগী হতে পারেন মমতা! রইল আপডেট
উল্লেখ্য, ভারতের সরকারি আধিকারিকদের ২৬.৫ কোটি ডলারের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া অভিযোগ উঠেছে আদানির বিরুদ্ধে। এই আবহে মার্কিন মুলুকে একটি মামলায় ভাইপো সহ অভিযুক্ত হয়েছেন ধনকুবের গৌতম আদানি এবং তাঁর ভাইপো সহ বেশ কয়েকজন ভারতীয় ব্যবসায়ীর। রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্কিন বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা এবং কর্মকর্তাদের ঘুষের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ এনে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার বিভাগ এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। এসইসি-র পাঠানো তলবের নোটিশে লেখা হয়েছে, এতে সাড়া না দিলে এমনিতেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারে তা গণ্য করা হবে। (আরও পড়ুন: নতুন মুখ্যমন্ত্রী পাবে মহারাষ্ট্র! BJP-র হয়ে সওয়াল অজিত পাওয়রের NCP-র)
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতীয় আধিকারিকদের ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিল তারা। এরই মাধ্যমে আমেরিকা এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করে তারা টাকা তুলেছিল বাজার থেকে। দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই এবং ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় সরকারি আধিকারিকদের ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আদানি গোষ্ঠী। ভারতীয় কর্মকর্তাদের ২৫ কোটির ডলারেরও বেশি ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে সৌরশক্তি সরবরাহের লাভজনক চুক্তি পেয়েছিল আদানি। এই চুক্তিগুলো থেকে ২০ বছরে ২০০ কোটি ডলারের বেশি মুনাফা অর্জনের আশা করা হয়। (আরও পড়ুন: আজ তৈরি হবে গভীর নিম্নচাপ, দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় পরপর বৃষ্টির পূর্বাভাস)
জানা গিয়েছে এই মামলায় গৌতম আদানির পাশাপাশি সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের নির্বাহী এবং আজিউর পাওয়ার গ্লোবাল লিমিটেডের নির্বাহী সিরিল কাবানেসকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। যদিও এই সব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী। এই মামলা প্রসঙ্গে আদানির মুখপাত্র ইতিমধ্যেই বলেছেন, 'মার্কিন বিচার বিভাগ এবং মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি গ্রিনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা ভিত্তিহীন এবং আমরা তা অস্বীকার করছি। এমনিতেও সেই বিবৃতিতেই মার্কিন বিচার বিভাগ বলেছে - এই চার্জগুলি শুধু অভিযোগ মাত্র এবং অভিযুক্তকে ততক্ষণ নির্দোষ বলে গণ্য করা হবে যতক্ষণ না এই সব অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে যাচ্ছে।'