প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিল দিল্লি হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের সঙ্গে যুক্ত, সেই ঘটনায় পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে শুনানি ঝুলে রয়েছে। বুধবার নিম্ন আদালতের সেই বিচার প্রক্রিয়ায় স্থাগিতাদেশ দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
ইডি-র অভিযোগ হল, ইউপিএ সরকারের জমানায়, যে সময় পি চিদম্বরম কেন্দ্রের মন্ত্রী ছিলেন, সেই সময় ২০০৬ সালে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তি সম্পাদন করতে বেআইনিভাবে 'ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন বোর্ড' (এফআইপিবি)-এর অনুমোদন পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
এর জন্য পি চিদম্বরম কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী হিসাবে তাঁর পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন বলে দাবি ইডি গোয়েন্দাদের। এছাড়া, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিবিআই-ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছে।
তাদের বক্তব্য হল, সেই সময় পি চিদম্বরম নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অনুমোদনটি পাইয়ে দিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতেই নাকি নিয়ম ভেঙেছিলেন তিনি। যার পরিবর্তে তাঁরও লাভ হওয়ার কথা ছিল।
উল্লেখ্য, এই মামলায় ২০২২ সালের মার্চ মাসে পি চিদম্বরম ও তাঁর ছেলে কার্তি চিদম্বরমের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে সংশ্লিষ্ট আদালত।
এবার সেই মামলাতেই নিম্ন আদালতের শুনানির উপর স্থগিতাদেশ দিল দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি মনোজ কুমার ওহরির বেঞ্চ। বিচারপতি ওহরি বলেন, 'আমি একটি বিস্তারিত অর্ডার পাস করব। নোটিশ ইস্যু করব। আগামী শুনানির দিন পর্যন্ত আবেদনকারীর বিরুদ্ধে চলা বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।'
প্রসঙ্গত, দিল্লি হাইকোর্টে করা আবেদনে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা দাবি করেন, নগর দায়রা আদালতের রায় বাতিল করা হোক এবং তাঁর বিরুদ্ধে চলা বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত করা হোক।
এক্ষেত্রে পি চিদম্বরমের যুক্তি ছিল, যে অপরাধ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে এবং সেই ঘটনা যখন ঘটেছিল বলে বলা হচ্ছে, তখন তিনি একজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন। উপরন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার প্রাথমিক অনুমতিও ইডি পায়নি।
অথচ, তা সত্ত্বেও এই মামলায় নিম্ন আদালত তাঁর বিরুদ্ধে শুনানি শুরু করে দেয়। যা আইনত ভুল বলে দাবি করা হয় চিদম্বরমের তরফে।
যদিও, এদিন দিল্লি হাইকোর্টে ইডি-র হয়ে উপস্থিত ছিলেন তাদের আইনজীবী তথা স্পেশাল কাউন্সিল জোহেব হুসেন। তিনি পি চিদম্বরমের দাবি খারিজ করে দেন। বলেন, ওই অনুমোদন দায়ের করতে কিছুটা দেরি হলেও, নিম্ন আদালত এই বিষয়ে চার্জশিট ও আবেদন গ্রহণ করার দুই বছর পর তা জমা করা হয়।
একইসঙ্গে, ইডি-র আইনজীবী এও বলেন, যেহেতু অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা তাঁর অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিলেন, তাই এক্ষেত্রে অনুমোদনের কোনও প্রয়োজন ছিল না।
যদিও আদালত, আপাতত এই মামলায় নিম্ন আদালতের শুনানি স্থগিত রেখে চিদম্বরমের উত্থাপিত বিষয়গুলির নিরিখে ইডি-র বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে।