শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ইতিমধ্যেই মায়ানমারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রবল কম্পন অনুভূত হয়েছে থাইল্য়ান্ডেও। কিন্তু, যে মুহূর্তে ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছিল, ঠিক সেই সময় কেমন ছিল পরিস্থিতি? কেমন ছিল আমজনতার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া? থাইল্য়ান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্কক থেকে স্বদেশে ফিরে সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানালেন ভারতীয় পর্যটকরা।
শুক্রবার (২৮ মার্চ, ২০২৫) সকালে প্রথমবারের জন্য কম্পন অনুভূত হয় মায়ানমার। যার মাত্রা ছিল ৭.৭। তার জেরে কেঁপে ওঠে প্রতিবেশী রাষ্ট্র থাইল্য়ান্ডও। আর, থাইল্যান্ড ভারতীয়দের পছন্দের পর্যটনকেন্দ্র। তথ্য বলছে, ভূমিকম্পের সময়েও সেখানে অনেক ভারতীয় পর্যটক ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন।
তেমনই একজন অলোক মিত্তল। ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতা ফেরার পর বিমানবন্দরেই সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রতিনিধিকে নিজের অভিজ্ঞতা শোনান অলোক।
তিনি বলেন, তাঁরা শুক্রবার সকালে ব্যাঙ্ককের একটি মলে ঘুরছিলেন। অলোক মনে করেন, এটা তাঁদের সৌভাগ্য যে সেই সময় মলের একতলাতেই ছিলেন তাঁরা। মলটি ছিল বিরাট বড় একটি বহুতলে। হঠাৎ করেই অলোকের মনে হয়, তাঁর মাথা ঘুরছে। কিন্তু, সেই ভুল ভাঙতে মাত্র কয়েক মুহূর্ত লাগে তাঁর।
অলোক দেখেন, চারপাশে মানুষজন ভয়ে চিৎকার করছে, সকলে ছুটে মলের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে! অলোক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাও তেমনটা করেন। সবাই মিলে রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে এসে দাঁড়ান।
কম্পন তখনকার মতো থামলে এরপর সোজা নিজেদের হোটেলের সামনে পৌঁছন মিত্তল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, তখনই কাউকে হোটেলে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কারণ, সেটা ছিল বিপজ্জনক। যেকোনও সময় বড়সড় আফটার শক আসতে পারত।
অলোক জানান, ওই অবস্থাতেই প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে তাঁরা রাস্তায় বসেছিলেন। বাকি সকলেরও একই অবস্থা ছিল। এমনকী, হোটেলের কর্মীরাও বাইরেই ছিলেন। প্রায় ৬ ঘণ্টা পর হোটেল কর্তৃপক্ষ সকলকে একবারের ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেয়।
অলোক বলেন, এরপর আর তাঁদের ওখানে থাকতে মন চাইছিল না। তাই তাঁরা সটান হোটেলের ঘরে ঢুকে নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে নেন। এবং ভারতে ফেরার পরের বিমানের টিকিট কেটে পৌঁছে যান বিমানবন্দরে।
অলোক জানান, এত বড় একটি বিপর্যয় ঘটে যাওয়ার পরও কিন্তু হোটেল থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছতে তাঁদের কোনও সমস্য়া হয়নি। এরপর বিমান ধরে ব্য়াঙ্কক থেকে কলকাতা পৌঁছন অলোক মিত্তল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
প্রায় একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন দিলীপ আগরওয়াল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। তাঁরাও ব্যাঙ্কক বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁরাও ভূমিকম্পের সময় একটি মলেই ছিলেন।
দিলীপ জানান, ভূমিকম্পের সময় সমস্ত কিছু অত্যন্ত বিপজ্জনকভাবে দুলছিল। এমনকী, চোখের সামনেই মুহূর্তে তাঁরা একটি বহুতল ভেঙে পড়তে দেখেন!
এসব দেখার পর দিলীপ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরাও ভারতে ফিরে আসেন। তাঁরাও জানান, এত বড় বিপর্যয়ের পরও দেশে ফিরতে কোনও সমস্য়া হয়নি তাঁদের।