মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানাকে নিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করল পাকিস্তান। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে যখন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত জঙ্গিকে ভারতে আনা হচ্ছে, সেই আবহে ইসলামাবাদের তরফে সাফাই গেয়ে দাবি করা হয়েছে, এটা 'অত্যন্ত স্পষ্ট' যে তাহাউর এখন কানাডার নাগরিক। গত দু'দশক ধরে পাকিস্তানি নথিপত্রের পুনর্নবীকরণ করায়নি বলে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে। আপাতত পাকিস্তানের সেই মন্তব্য নিয়ে আপাতত ভারতের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে অতীতে ভারত একাধিকবার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, ২৬/১১ মুম্বই হামলার ঘটনায় পাকিস্তানি জঙ্গিদের যে যোগ আছে, সেটার প্রমাণ দেওয়া হয়েছে ইসলামবাদকে। কিন্তু হাতে হাত গুটিয়ে বসে থেকেছে বলে একাধিকবার অভিযোগ করেছে ভারত।
তাহাউরের প্রত্যপর্ণ অস্বস্তি বাড়ল পাকিস্তানের?
সেই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তাহাউরকে যে ভারত নিজেদের হাতে পাচ্ছে, তাতে ইসলামাবাদের যে অস্বস্তি বাড়বে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই সংশ্লিষ্ট মহলের। ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডের (এনসিজি) প্রাক্তন কম্যান্ডো সুরেন্দ্র সিং বলেছেন, 'আজ ভারতের জন্য একটা বড় দিন। আমি প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদী, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে (ডোনাল্ড ট্রাম্প) এবং ওর (তাহাউর) প্রত্যপর্ণের সঙ্গে যুক্ত থাকা এজেন্সিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।'
'তাহাউরের ফাঁসি হলে পাকিস্তানের গালে থাপ্পড় পড়বে'
ওই প্রাক্তন এনসিজি কম্যান্ডো ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার সময় সুরক্ষা বাহিনীর অপারেশনে যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে সংবাদসংস্থা এএনআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি আরও বলেছেন যে ‘যখন ওকে (তাহাউর) ফাঁসিতে ঝোলানো হবে, তখন সেটা শুধুমাত্র সন্ত্রাসবাদের গালে থাপ্পড় হবে না। বরং পাকিস্তানের গালেও সপাটে থাপ্পড় হবে।’
পাকিস্তানে বসে সন্ত্রাসবাদে মদত? বুক কাঁপিয়ে দেওয়ার আর্জি
একইসুরে তাহাউরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আর্জি জানিয়েছেন মুম্বই পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর তুকারাম ওম্বলের ভাই একনাথ বলেছেন, 'প্রচুর মানুষ ও পুলিশ অফিসারকে হত্যা করা হয়েছিল। ওটা ভয়াবহ রাত ছিল। মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড ডেভিড হেডলির ঘনিষ্ঠতম সহযোগী ছিল তাহাউর রানা। আগেই ওদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া উচিত ছিল না। কিন্তু আজ দেশের জন্য একটা বড় দিন। সরকারের কাছে আমার একটা আর্জি আছে, সেটা হল যে (তাহাউর রানাকে) যেন যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।'
উল্লেখ্য, মুম্বই পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর তুকারাম ওম্বলেই আজমল কাসভকে গ্রেফতার করেছিল। পরে তাঁকে মরণোত্তর অশোক চক্র পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। যা ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার। সেই তুকারাম ওম্বলের ভাই দাবি করেছেন, তাহাউরকে এমন কঠোর শাস্তি দিতে হবে যে পাকিস্তানের বসে যারা এসব কাজ করছে, তাদের যেন বুক কেঁপে যায়।