পুণেকাণ্ডে অভিযুক্ত অবশেষে গ্রেফতার। উল্লেখ্য, পুণেতে পুলিশ স্টেশন থেকে মাত্র ১০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে ধর্ষণ করা হয়েছিল ২৬ বছর বয়সি এক তরুণীকে। দাবি করা হয়েছে, অন্তত দু'বার ধর্ষণ করা হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল দত্তাত্রেয় রামদাস গাড়ে। এই আবহে মধ্যরাতে শিরুর তেহসিল থেকে তাকে ধরে পুণে পুলিশ। প্রসঙ্গত, পুণে ও অবিল্যনগর জেলায় চুরি, ডাকাতি ও চেন ছিনতাইয়ের অর্ধ ডজন মামলায় অভিযুক্ত এই দত্তাত্রেয়। একটি মামলায় ২০১৯ সাল থেকে সে দামিনে রয়েছে। (আরও পড়ুন: নয়া প্রধান পাচ্ছে SEBI, শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রকের মাথায় বসতে চলা তুহিন কে?)
আরও পড়ুন: ফের কেঁপে উঠল বাংলা, ভোররাতের ভূমিকম্পে ভাঙল অনেকের 'গভীর ঘুম'
পুলিশ ১৩টি দল গঠন করে দত্তাত্রেয়কে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছিল। ধর্ষণে অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিতে ১ লাখ টাকা পুরস্কারেরও ঘোষণা করা হয়েছিল। ড্রোন ও ডগ স্কোয়াড নিয়ে দত্তাত্রেয়র গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল পুণে সিটি ও গ্রামীণ পুলিশ। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে, ধর্ষণের ঘটনার প্রায় ৬৬ ঘণ্টা পরে পুণের শিরুর তেহসিল থেকে দত্তাত্রেয়কে ধরে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা ৪৫ থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। নিজের বয়ানে নির্যাতিতা জানান, তিনি নিজের গ্রামের বাড়ি যেতে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেছিলেন। তাঁর গন্তব্যের উদ্দেশে কোন বাস যাবে, তা জানতে বাস স্ট্যান্ডে থাকা একজনকে প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। সেই সময় স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা শিবশাহি বাসের দিকে দেখায় এক ব্যক্তি। সেই বাসে প্রথমে উঠতে ইতস্তত করেছিলেন সেই তরুণী। তারপর তিনি উঠে পড়েন। এরপরই অভিযুক্ত তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাসের দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করে সেই তরুণীকে। নির্যাতিতার অভিযোগ, অভিযুক্ত তাঁকে 'দিদি' সম্বোধন করে আস্থা অর্জন করে নেয়। নির্যাতিতার কাছে বাস কন্ডাক্টর হওয়ার দাবি করেছিল দত্তাত্রেয়। এদিকে স্ট্যান্ডের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্তের সঙ্গে বাসের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন ওই মহিলা।
এদিকে এই ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখনই পুণের স্বরগেট রাজ্য পরিবহণ স্ট্যান্ডের পরিত্যক্ত বাসে যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে কন্ডোম, শাড়ি, অন্তর্বাস, মদের বোতল। এই আবহে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই আবহে পরিবহণমন্ত্রী প্রতাপ সারনায়েক বাস টার্মিনাসের ২৩ জন বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই আবহে শিবসেনা (ইউবিটি) কর্মীরা স্বরগেট স্টেশনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। বাসস্ট্যান্ডের অফিস ভাঙচুর করা হয়। দলের নেতা বসন্ত মোরে দাবি করেন, গার্ডের কেবিনের কাছে কয়েকশো কন্ডোমের প্যাকেট ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এটা দেখে স্পষ্ট যে এমন ঘটনা এখানে প্রথমবার ঘটেনি। নিরাপত্তারক্ষীদের মদতেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মহারাষ্ট্র স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের পুণে ডিভিশন কন্ট্রোলার প্রমোদ নেহুল দাবি করেন, তাঁদের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। এবং ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন রয়েছে সেখানে। এরপরও কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবে পরিত্যক্ত বাসগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থা খতিয়ে দেখবেন বলে দাবি করেন।