তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু নেতা–কর্মী দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। এই কথা বিরোধী দলগুলি বলছে না। এই কথা বলছেন স্বয়ং দলের বর্ষীয়ান বিধায়ক। একদা তিনি রাজ্যের মন্ত্রীও ছিলেন। এখন তাঁর দলই সরকারে আছে। আর দলের একাংশ নেতা–কর্মীরা দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কামারহাটির তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মদন মিত্রের এমন মন্তব্যে বাড়ল দলের অস্বস্তি। আগামী ২৩ নভেম্বর রাজ্যের ৬টি বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হবে। তার আগে মদন মিত্রের এমন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
ইতিমধ্যেই দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনায় বিদ্ধ তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে এবার শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়ল দলেরই বিধায়ক মদন মিত্রের বক্তব্যে। এদিন মদন মিত্র বলেন, ‘চোর যেখানেই যাবে, চুরি করবে। করছে দলের মধ্যেই কিছু। গিরগিটির মতো মিশে আছে। আর কিছু লোক এসেছে তারা ভাবছে, তৃণমূলে এসেছি, আর কবে পাব, না পাব, এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই। এটার উপরে কঠোর নজরদারি দরকার। আরও ক্লোজ ভিজিলেন্স দরকার। সার্ভিলেন্স দরকার। প্রয়োজনে দলে যারা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছে, তাদের উপর নজর রাখুন। টেলিফোনের উপরে নজর রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: পুলিশ–দমকল–স্বাস্থ্য–পুরসভা কর্মীদের জন্য সুখবর, বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে কিছুদিন আগে ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীরও দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে ছিলেন। ভরতপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বক্তব্য, ‘চায়ের দোকানে বা অন্য কোনও জায়গায় যদি কেউ আক্রান্ত হয়, সে তৃণমূল আক্রান্ত হোক, বিরোধীরা কেউ আক্রান্ত হোক, এটা কিন্তু ভাল বার্তা যায় না। সাধারণ মানুষ এটা নিয়ে চিন্তিত হন। কেন থানা থেকে ২০০ মিটার দূরত্বে গুলি খেয়ে মানুষ মরবে? এটার জন্য পুলিশ–প্রশাসনের গাফিলতি প্রকাশ পাচ্ছে। কিন্তু অফিসাররা এটাকে নিয়ে এমনভাবে এই সরকারকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে, সেটা খুব মারাত্মক। এটাও গ্রামগঞ্জে প্রবাদ আছে, যে হরি ঘোষের গোয়ালে যে যা খুশি করো, পার পেয়ে যাবে।’
আর মদন মিত্রের মন্তব্যে বাড়তি অস্বস্তি তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। কালারফুল নেতার সাফ কথা, ‘দলের একাংশ, এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই নীতি নিয়ে চলছে। এটার উপর কঠোর নজরদারি দরকার। জ্যোতিবাবু যখন পুলিশমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী তখনও আমরা রাজনীতিতে কংগ্রেসের। আমাদের নেত্রীও কংগ্রেস করতেন। আমরাও কংগ্রেস করতাম। তার পরবর্তী সময় বুদ্ধবাবু যখন মুখ্যমন্ত্রী, পুলিশমন্ত্রী ছিলেন, একটা থানার বিরুদ্ধে যদি পুলিশ সুপারকে বলা হতো, যে এই থানার অফিসার, এই ধরনের গাফিলতি করছে, জনগণের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে, দুর্নীতিতে যুক্ত আছে, বলার সঙ্গে সঙ্গে না হলেও, একদিন পরে হলেও তার একটা ফিডব্যাক পেতাম। সেই পুলিশ সুপারের কাছ থেকে। ওসি বা সেই থানার বিরুদ্ধে একটা বিচার পাওয়া যেত।’