কামারহাটির জয়ন্ত সিংয়ের বাড়ি ভাঙা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়ল পুরসভা। চার তলার বেআইনি বাড়ি নিয়ে সময় পেরিয়েও যাওয়ার পরেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি পুরসভা। তাই এবার রীতিমতো হাইকোর্টের ধমক খেল কামারহাটি পুরসভা। আদালতের নির্দেশ, জয়ন্তের বাড়ি ভাঙা যাবে না। পুরসভার পক্ষ থেকে যে বাড়ি ভাঙার নোটিশ জারি করা হয়েছিল, তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পুরসভার কমিশনারকে ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট। বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের মন্তব্য, পুর কমিশনারের সেই পদে থাকার আর যোগ্যতাই নেই।
আরও পড়ুন: জয়ন্তর এত বড় বাড়ি! আকাশ থেকে পড়ছে তৃণমূল, আর মেশা যাবে না…একমত সৌগত-মদন
জানা যায়, আগে কামারহাটির জয়ন্ত সিংয়ের বাড়ির চতুর্থ তলাকে বেআইনি বলে ভাঙার নোটিশ পাঠায় পুরসভা। সেই নোটিশই খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারপতি পর্যবেক্ষণে জানান, কারও বাড়ি ভাঙার আগে শুধু মালিক নন, ওই বাড়িতে যাঁরা থাকেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। অথচ পুরসভা সেই দায়িত্বও পালন করেনি। শুনানির সময়ে বিচারপতির দিকে থেকে আসে একের পর এক কড়া মন্তব্য। তিনি স্পষ্ট বলেন, অর্ডারে কোথাও বাড়ি ভাঙার কথা বলা হয়নি। বাড়ি খালি করে দিতে বলা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে দু'পক্ষকে ডেকে পুর কর্তৃপক্ষকে শুনানি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এরপর পুরসভার আইনজীবীকে বলেন, ‘এই অর্ডারটা জোরে জোরে পড়ে শোনান। কমিশনার কি ইংরেজি বোঝেন না?’
এখানেই থেমে থাকেননি বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্ত। তিনি বলেন, কমিশনার যদি আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করতে পারেন, তাহলে ওই পদে থাকার অধিকারই নেই। আমি তো কোনও পরামর্শ দিচ্ছি না, আমি নির্দেশ দিচ্ছি। সেই নির্দেশ পালন না হলে পুরসভা নিজেই ভাবুক, কীভাবে তারা চলবে।
বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, শুনানিতে কী হল তা আদালতকে জানাতে হবে। এরপরই এ বিষয়ে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে। উল্লেখ্য, জয়ন্ত সিং এলাকার একসময়ের ত্রাস হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ৯ জুলাই প্রকাশ্যে মা-ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে জয়ন্তর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, চোর সন্দেহে ক্লাবের মধ্যে নাবালকের উপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসে। তাতে নাম জড়ায় জয়ন্তের। এছাড়াও, ভরা বাজারে অস্ত্র প্রশিক্ষণের মতো একাধিক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে জয়ন্তর বিরুদ্ধে। তারপরে তিনি উঠে আসেন খবরের শিরোনামে। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যেতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সময়েই সামনে আসে, রুদ্রপ্রতাপ লেনের একটি পুকুরের একাংশ বুজিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল তিনতলা ভবন। তা নিয়ে মামলা গড়ায় হাইকোর্টে।