ব্রিটিশ আমলের আইন সংশোধন করে মহিলাদের স্বার্থে বড় বদল আনল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। যার ফলে এবার থেকে আর বারে কাজ করার ক্ষেত্রে আর কোনও আইনি বাধা বা জটিলতা থাকল না মহিলাদের জন্য।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা সদ্য পাস করেছে 'বঙ্গ আর্থিক বিল ২০২৫'। এই বিলের মাধ্যমেই ১৯০৯ সালের বঙ্গ আবগারি আইনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হল - বারে কাজ করা নিয়ে মহিলাদের উপর জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। যার জন্য আগেও বহুবার মহিলাদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে নানা মহলের তরফে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এই বিল পেশ করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। গত বুধবার (১৯ মার্চ, ২০২৫) সেই বিল বিধানসভায় পাসও হয়ে যায়। সূত্রের দাবি, রাজ্যে আবগারি আইনকে যুগোপযোগী ও আধুনিক করে তুলতেই ব্রিটিশ আমলের ওই আইনে বেশ কিছু সংশোধন করা হয়। তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, রাজ্য তথা দেশের বর্তমান আইন কাঠামো এবং বর্তমান আবগারি ক্ষেত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এই সংশোধনীগুলি নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
যার মধ্যে অন্যতম হল - অন-ক্যাটেগরির মদের দোকানগুলিতে মহিলাদের নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ ও নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নেওয়া। সংশ্লিষ্ট বিলে উল্লেখ করা হয়েছে, পুরোনো ওই বিধিনিষেধ আসলে বৈষম্যমূলক ছিল। তাই অন-শপগুলিতে মহিলাদের নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ওই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়া জরুরি ছিল।
একইসঙ্গে, ভারতের কেন্দ্রীয় আইনি কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই বিলে ভারতের ফৌজদারি আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রধান ধারাগুলির বদলে যথাক্রমে - ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার সংশ্লিষ্ট ধারাগুলিকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
এই বিলের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী হল - গুড়ের উৎপাদনের উপর নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। যার লক্ষ্য হল - গুড় ব্যবহার করে বেআইনি মদের উৎপাদনে রাশ টানা। বিলে বলা হয়েছে, মদ তৈরির কাঁচামাল হিসাবে গুড়কেও এবার থেকে উল্লেখ করতে হবে। যাতে গুড় ব্যবহার করা বেআইনি মদের উৎপাদন রোখা যায়।
বিলে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ১৯০৯ সালের বঙ্গ আবগারি আইন এবং ১৯৭৩ সালের পশ্চিমবঙ্গ গুড় নিয়ন্ত্রণ আইন যাতে পরস্পরের পরিপূরক হতে পারে এবং একে অপরকে 'ওভারল্যাপ' না করে, আইন সংশোধনের সময় সেদিকেও খেয়াল রাখা হয়েছে।
এছাড়াও, মদের দোকানের সাময়িক লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রেও বদল আনা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থেই সাময়িক লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানগুলি যাতে স্থায়ী বোঝাপড়া (পার্মানেন্ট সেটলমেন্ট) হওয়া পর্যন্ত সচল থাকতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।