শুক্রবার ধরমশালায় শোয়েব বশিরকে চার হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি করেন শুভমন গিল। তিনি ১৩৭ বলে নিজের শতরান পূরণ করেন। এদিন খেলা দেখতে শুভমনের বাবা লখবিন্দর সিং ধরমশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে উপস্থিত ছিলেন। সিরিজের পঞ্চম তথা শেষ টেস্টে প্রতিটি ইংলিশ বোলারদের বিরুদ্ধে ছেলের সাহসী স্ট্রোকপ্লেতে আগে থেকেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন লখবিন্দর। আর শুভমনের সেঞ্চুরির পর সেই উচ্ছ্বাস দ্বিগুণ হয়ে যায় তাঁর বাবার।
ছেলে সেঞ্চুরি করেই হেলমেট খুলে মাথা নীচু করে বাবাকে প্রণাম করেন। উচ্ছ্বসিত লখবিন্দরও দু'হাত মুঠো করে শূন্যে তুলে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তাঁর মুখটি গর্বে জ্বলজ্বল করছিল। তিনি যে ছেলের শতরানে উচ্ছ্বসিত ছিলেন, তা একেবারেই লুকনোর চেষ্টা করেননি।
লখবিন্দর নিজেও ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলতেন। তিনিই শুভমন গিলের প্রথম কোচ এবং বেশ কঠোর হাতেই ছেলেকে গড়ে তুলেছেন। দ্বিতীয় টেস্টে যখন শুভমন সেঞ্চুরি করলেও, সেটাকে বড় রানে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি, এবং যেভাবে আউট হয়েছিলেন, তাতে লখবিন্দর বিরক্ত হয়েছিলেন। এবং পরে শুভমন বলেওছিলেন, হোটেলে ফিরলে, বাবার কাছে বকুনি খাবেন তিনি।
গিলের ক্ষেত্রে বরাবরই এমনটা হয়ে থাকে। যখনই তিনি কোনও ভাবে ব্যর্থ হন বা ভুল করেন, তখনই তাঁকে বাবার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয়। তবে বাবার পরামর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার ঘুরেও দাঁড়ান শুভমন গিল। জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে ২০২২ সালে দ্বিতীয় ম্যাচে, সেট হওয়ার পরেও উইকেট দূরে ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য শুভমন তাঁর বাবার কাছ থেকে বকুনি খেয়েছিলেন। সেই সিরিজের সেরা প্লেয়ার অবশ্য হয়েছিলেন শুভমনই।
যাইহোক শুভমন গিল অবশ্য ধরমশালার প্রথম ইনিংসে বেশ ভালো ব্যাট করেন। তিনি জেমন অ্যান্ডারসনকে একই ওভারে একটি ছক্কা, দু'টি চার মারেন। চার মেরে সেঞ্চুরি করেন। শুক্রবার অপরাজিত ২৬ রানে খেলতে নেমেছিলেন শুভমন। এদিন ১১০ রান (১৫০ বলে) করে অ্যান্ডারসনের বলেই বোল্ড আউট হন। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১২টি চার, ৫টি ছক্কায়।
ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে পুরো কেঁপে গিয়েছেন। ভারতের বাঁ-হাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ দুরন্ত ছন্দে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন। এটি এক ইনিংসে তাঁর চতুর্থ পাঁচ উইকেট। রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়েছেন ৪ উইকেট রবীন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন এক উইকেট। বৃহসপ্তিবার প্রথম দিনে চায়ের পরপরই ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। জ্যাক ক্রলি ৭৯ করেন। এ ছাড়া বাকিরা কেউ ৩০ রানেও পৌঁছতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন জনি বেয়ারস্টো।
জবাবে ভারতের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং রোহিত শর্মা মিলে শুরুটা দুরন্ত করেন। ৫৪ করে যশস্বী আউট হলেও, রোহিত সেঞ্চুরি পূরণ করেন। ১০৩ রান করেন ভারত অধিনায়ক। শুভমন গিলও সেঞ্চুরি হাঁকান। দেবদত্ত পাডিক্কাল আবার ৬৫ করেন। সরফরাজ খান ৫৬ করে আউট হন। ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই অন্ততপক্ষে হাফসেঞ্চুরি করার নজির গড়েছেন। এই খবরটি লেখার সময়ে ভারত ৮ উইকেট হারালেও, ৪৫০ রান পার করে ফেলেছিল।