আজ, রবিবার সন্দেশখালি পার্ট–২ নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র আর সংযম রাখতে পারলেন না। থানা ঘেরাও থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে রাস্তায় ফেলে মারধর করার ঘটনা ঘটল। আর এই ঘটনার সঙ্গে রেখা পাত্র জড়িত বলে অভিযোগ। ভাইরাল হওয়া সন্দেশখালি স্টিং অপারেশনের পার্ট–১ এবং পার্ট–২ ভিডিয়ো’র সত্যতা করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে এই ঘটনার পিছনে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মার হাত আছে অভিযোগ তুলে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের দাবি জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে নালিশ ঠুকেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস যে নালিশ ঠুকেছে নির্বাচন কমিশনের কাছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সন্দেশখালির এই ষড়যন্ত্রে রেখা শর্মাকে সহযোগিতা করেছিলেন পিয়ালি দাস–সহ বিজেপির একাধিক নেতারা। তাঁদের বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হোক। এটা একটা বিশাল বড় অপরাধ। এই ঘটনা আসলে জালিয়াতি, প্রতারণা, ভয় দেখানো এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত চিঠিতে। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সন্দেশখালি স্টিং অপারেশন পার্ট–২ প্রকাশের পরও গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। তিনি বলেন, ‘এটা তৃণমূলের সাজানো ঘটনা। সন্দেশখালির আন্দোলনে পেরে না উঠে এসব চক্রান্ত করছে।’
এই অভিযোগ বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র করলেও কেউ এখনও আদালতে গিয়ে মানহানি বা ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়ানো হচ্ছে বলে মামলা করেননি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বাংলার ব্যারাকপুরে সভা করে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ তুললেও রেখা পাত্রের নাম উচ্চারণ করেননি। আর নির্বাচন কমিশনে নালিশ নিয়ে রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য নেত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘সন্দেশখালিতে নারী ধর্ষণের অভিযোগ শুধু বিজেপির সাজানো তাই নয়, তাতে পূর্ণ মদত দিয়েছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো থেকে স্পষ্ট, সাদা কাগজে সই করিয়ে ধর্ষণের মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর হাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্টো ছবি, এক্স হ্যান্ডেলে গর্জে উঠলেন অভিষেক
এছাড়া গত ৪ মে সন্দেশখালির বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালের যে ভিডিয়ো ফাঁস হয়েছিল, তাতে গঙ্গাধর স্পষ্টতই বলেছেন, সন্দেশখালিতে রেখা পাত্রদের ধর্ষণের অভিযোগ সাজানো। তাঁদের ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছিল। তার জন্য বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের টাকা ও মোবাইল দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। তারপরই তিন মহিলাকে বলতে দেখা গেল, সাদা কাগজে সই করিয়ে সেখানে ধর্ষণের অভিযোগ লেখানো হয়েছিল। এখন অভিযোগ তুলে নিতে চাইলে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। আর ১১ মে গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে দেখা গিয়েছে, সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের প্লট সাজাতে ৭২ জন মহিলাকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে শশী পাঁজার বক্তব্য, ‘এভাবে কেউ যাতে গুরুত্বপূর্ণ পদের অপব্যবহার করতে না পারেন, তাই ওনার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছি।’