একেই বলে শেকড়ের প্রতি টান। বিই কলেজ শিবপুর থেকে পাশ করেছিলেন তিনি। সেই প্রাক্তনী বর্তমানে আমেরিকায় থাকেন। এবার সেই প্রাক্তনী ওই বিই কলেজে বিশেষ গবেষণার জন্য এক মিলিয়ন ডলার দান করবেন বলে খবর। সব মিলিয়ে তিনি ৮.৬ কোটি টাকা দান করবেন বলে খবর। মূলত জল ও পরিবেশগত গবেষণার উপর সেন্টার তৈরির জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এটাই তাঁর ইচ্ছা।
এটা হবে সাম্প্রতিক অতীতে এই ইনস্টিউটে সবথেকে বড় দান। ওই প্রাক্তনীর নাম অরুণ দেব। বয়স ৮৮ বছর। ১৯৫৭ সালে তিনি বিই কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে পাশ করেছিলেন। এরপর একের পর এক উচ্চশিক্ষার ধাপ পেরিয়ে গিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিনি আমেরিকায় থাকেন। কিন্তু ফেলে আসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁর টান আজও অব্যাহত। ভুলে যান সেই বিই কলেজকে। এখান থেকেই তো তিনি একদিন যাত্রা শুরু করেছিলেন।
শিক্ষকতায় প্রায় ৬০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। গবেষণাও করেছেন দীর্ঘদিন। গোটা বিশ্বজুড়ে তাঁর জলসম্পদ ও ওয়েস্ট ওয়াটারের উপরের গবেষণা প্রশংসা পেয়েছে। আর এবার তিনি চান তাঁর ভারতে, নিজের ফেলে যাওয়া শহরে, নিজের ফেলে যাওয়া ইনস্টিটিউটে গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে। কিন্তু তার জন্য বিপুল অর্থ দরকার। আর সেই অর্থ তিনিই তুলে দিচ্ছেন সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাতে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডিন দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, কোনও একক জনের এত বড় দান সম্ভবত এর আগে হয়নি।
এদিকে এর আগে ১৯৫৮ সালে তিনি এই বিই কলেজেই শিক্ষকতা করেছিলেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত এখানে পড়িয়েছিলেন। এরপর ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে ফ্য়াকাল্টি মেম্বার হিসাবে যোগদান করেন। সেখানে তিনবছর পড়িয়েছেন।
কিছুদিন নটার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। ভিপি হিসাবে তিনি সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। এখনও পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি যুক্ত। মাঝেমধ্য়ে কলকাতায় আসেন। কলকাতার প্রতি টান এখনও আছে।
এদিকে প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, অরুণ দেব জানিয়েছেন, আমার ৮৮ বছর বয়স। জানি না কতদিন বাঁচব। কিন্তু আমার জীবদ্দশায় আমি আমার এই কাজ শেষ করে যেতে চাই। আমি ২০১৪ সালে একবার শুরু করেছিলাম। কিন্তু তখন সেটা বাস্তবে রূপ পায়নি। এরপর ফের সেই চেষ্টা চালাচ্ছি।