হিন্দু ধর্মে, উপবাস, ভক্তি এবং শুভ কর্মের চার মাসকে চাতুর্মাস বলা হয়। এই মাস ধ্যান, সাধনা এবং কর্মফল ভোগকারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চাতুর্মাস হল চার মাসের সময়কাল যা আষাঢ় শুক্লা একাদশী থেকে শুরু হয়ে কার্তিক শুক্লা একাদশী পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
চাতুর্মাসের ধর্মীয় ও সামাজিক গুরুত্ব
৬ জুলাই হল দেবশয়নী একাদশী উপবাসের দিন। এই দিন থেকে ভগবান বিষ্ণু পরবর্তী চার মাস যোগ নিদ্রায় প্রবেশ করেন। যার কারণে, পরবর্তী চার মাস কোনও ধরণের বিবাহ, বাগদান, মাথা মুণ্ডন বা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করা উচিত নয়। স্কন্দ পুরাণ অনুসারে, যখন ভগবান শ্রী হরি বিষ্ণু ক্ষীরসাগরে যোগ নিদ্রায় প্রবেশ করেন, তখন থেকে চাতুর্মাসের সময় শুরু হয়। স্কন্দ পুরাণে এই বিষয়ে উল্লেখ আছে, "চাতুর্মাস্যম হি দেবস্য বিষ্ণোর্নিদ্রায়ৈ কল্পিতম্।" যার অর্থ হল চাতুর্মাস মাস হল ভগবান বিষ্ণুর যোগনিদ্রার সময়, তাই এই সময়কাল নিয়মিত পালন করা উচিত।
আরও পড়ুন - শ্রাবণ মাসে শুরুর আগে ঘরে আনুন এইসব জিনিস, শিবের আশীর্বাদ বিরাজ করবে সংসারে
সাধু-ঋষিদের দৃষ্টিকোণ থেকে চাতুর্মাসের সময়কাল
- চাতুর্মাসের সময়, সাধু-ঋষিরা এক জায়গায় থাকেন।
- ভ্রমণ বা ত্যাগ করা এড়িয়ে চলুন।
- চাতুর্মাসের সময়, মানুষ সৎসঙ্গ, ধ্যান, পাঠ এবং নাম জপে মগ্ন থাকে।
- চাতুর্মাসকে যাযাবর জীবনের বিশ্রামকাল বলা হয়।
আরও পড়ুন - এই ৫ জ্যোতিষশাস্ত্রীয় ব্যবস্থা করে যে কোনও ইচ্ছা পূরণ, না হওয়া কাজও হয় সম্পন্ন
চাতুর্মাসের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
- আধ্যাত্মিক শক্তির সাথে সংযোগ স্থাপন এবং ধ্যান ও সাধনা করার জন্য চাতুর্মাস মাস অত্যন্ত শুভ সময়।
- এই সময়কালে উপবাস রাখা উচিত।
- ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা সৎসঙ্গে অংশগ্রহণ করা উচিত।
- চাতুর্মাস মাসে দান ও সেবা করার মাধ্যমে বিশেষ ফল পাওয়া যায়।
- চাতুর্মাস কেবল আধ্যাত্মিকতাই বয়ে আনে না, বরং সামাজিক পরিবর্তনও বয়ে আনে।
- এই সময়কালে সংযম এবং নিয়ম মেনে চলা হয়।
- উৎসবের মাধ্যমে সমাজে ঐক্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।
- চাতুর্মাসকে কেবল উপবাস এবং তিথির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা ভুল হবে। এই সময়টি জীবনের পবিত্রতা এবং বিশুদ্ধতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ, যা মন, মস্তিষ্ক এবং আত্মাকে পবিত্র করতে কাজ করে।