জগন্নাথের রথযাত্রা মানেই আপামর বাঙালির কাছে এক বৃহত্তর আবেগ। শ্রীচৈতন্যের সময়কাল থেকেই পুরীর রথযাত্রা বিখ্যাত হয়ে ওঠে বাঙালির কাছে। তার আগেও বঙ্গজীবনে শ্রীকৃষ্ণ ও জগন্নাথদেবের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। সেই শতাব্দীপ্রাচীন রথযাত্রার একটি বিশেষ ঐশ্বর্য হল রথের দড়ি বা রশি। রথের এই পবিত্র দড়ির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু লোকবিশ্বাস। মানুষের মনে আজও যা উৎসাহ ও উদ্দীপনা সঞ্চার করে। আজও তাই বহু মানুষ ছুটে যান পুরীতে। জগন্নাথের রথযাত্রার দিন রথের দড়িতে যদি হাত লাগানো যায়! কিন্তু কী কী শুভ ফল রথের দড়ি টানার? জেনে নেওয়া যাক।
পুনর্জন্মের কষ্ট থেকে মুক্তি
রথের দড়ি একবার টানতে পারলে নাকি পুনর্জন্ম থেকে মুক্তি মেলে। মনে করা হয়, রথের দড়িতে যিনি রথযাত্রার দিন হাত লাগিয়ে টানতে পারবেন, তাঁকে আর পৃথিবীতে পুনরায় জন্ম নিতে হবে না। পুনর্জন্ম থেকে মুক্তির অর্থ জাগতিক দুঃখকষ্ট থেকে মুক্তি। আর কখনও তাঁকে দুঃখকষ্ট পেতে হবে না।
পাপমোচন
রথের দড়ি অতীব পবিত্র বস্তু। তাই মনে করা হয়, এই দড়ি ধরে একবার অন্তত টানতে পারলে জীবনের সব পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পাপমোচনের জন্যই প্রতি বছর পুরীতে রথযাত্রার সময় ঢল নামে মানুষের।
গঙ্গা স্নানের মতোই পুণ্য
বিশ্বাস করা হয়, রথের দড়ি ছুঁলে গঙ্গা স্নানের মতোই পুণ্য হয়। রথের দড়ি যিনি টানেন তার সব পাপ খণ্ডিত হয়। যা আদতে জীবনে গঙ্গা স্নানের মতোই পুণ্য বয়ে আনে। তাই জীবনে অন্তত একবার রথের দড়ি টানার বাসনা থাকে সবার।
অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল
স্কন্দপুরাণেও জগন্নাথদেবের রথযাত্রার বিশদ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়েছে, রথের দড়ি একবার টানতে পারলে তা অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল দেয়। যিনি রথের দড়ি টানেন, তার জীবনে সুখ, সমৃদ্ধি ও ঐশ্বর্যের জোয়ার আসে। তাই রথের দড়ি একবার অন্তত ছোঁয়ার সংকল্প থাকে সকলের।
শিশুদের মাদুলি
রথের দড়ি নিয়ে বেশ কয়েকটি রেওয়াজও প্রচলিত রয়েছে। এই দড়ির সুতো দিয়ে মাদুলি বানিয়ে অনেকে শিশুর গলায় পরিয়ে রাখেন। এতে স্বয়ং জগন্নাথদেব শিশুকে রক্ষা করেন অসুস্থতার হাত থেকে।