বাংলার কুম্ভ শুরু হয়ে গেল। দলে দলে পূণ্যার্থীরা আসতে শুরু করেছেন। উদ্যোক্তারা বলছেন ৭০০ বছরের প্রাচীন ইতিহাসকে আবার আমরা ফিরিয়ে আনছি। দলে দলে আসছেন নাগাসাধুরা। গঙ্গার ধারে একের পর এক আখড়া। ধুনি জ্বালিয়ে বসেছেন সাধুসন্তের দল।
১১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বঙ্গীয় কুম্ভস্নান মহোৎসব। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। হুগলি জেলার ত্রিবেণীতে এই উৎসব শুরু হয়েছে। বহু সাধুসন্ত এসেছে। দলে দলে আসছেন পূণ্যার্থীরা। রাজ্য সরকারও নানাভাবে সহযোগিতা করছে।
ত্রিবেণীর সপ্তর্ষিঘাটে হবে কুম্ভস্নান। শাহি স্নান। বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সাধুরা এই ঘাটে প্রথম স্নান করবেন। তারপর সাধারণ মানুষ এই ঘাটে স্নান করতে পারবেন। সুরক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি নগর পরিক্রমা হবে। স্থানীয় কাউন্সিলর প্রশান্ত দাস HT বাংলাকে জানিয়েছেন, মেলাতে যাঁরা আসছেন তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেটা দেখা হচ্ছে।
মন কী বাতে ত্রিবেণীর এই কুম্ভ উৎসবের কথা উল্লেখ করেছিলেন খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে এই বছর থেকে রাজ্য সরকার পুরোদমে এই মেলার পাশে রয়েছে। অন্যদিকে সপ্তর্ষি ঘাট সংলগ্ন ময়দানে ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালন সমিতির উদ্যোগে নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে।
কীভাবে যাবেন বাংলার কুম্ভতে?
হাওড়ার দিক থেকে এলে কাটোয়া লোকালে ত্রিবেণী স্টেশনে নামতে পারেন। তারপর টোটোতে কুম্ভ প্রাঙ্গনে। হেঁটেও আসতে পারেন। খুব বেশি দূর নয়। অন্যদিকে হাওড়া বর্ধমান মেইন লাইনে মগরা স্টেশনে নেমে টোটো বা অটোতে চেপে আসতে পারেন ত্রিবেণীতে।
কেন কুম্ভ বলা হচ্ছে?
ইন্টারন্যাশানাল বেদান্ত সোসাইটির স্বামী নিগুরানন্দ পুরী HT Bangla-কে জানিয়েছেন, সমুদ্র মন্থনের পরে যে অমৃতকুম্ভ উঠেছিল সেটা নিয়ে কুম্ভের অবতারণা। প্রয়াগরাজ, হরিদ্বার, নাসিক, উজ্জয়িনী এই চার জায়গায় কুম্ভটা কিছুক্ষণের জন্য় রাখা হয়েছিল। তা থেকে কয়েক বিন্দু অমৃত পড়েছিল। সেটা পৌরানিক একটা কথা। তবে অন্যদিকটা হল ভারতে সবসময় বিদ্যার চর্চা হয়। সেক্ষেত্রে সমস্ত বিদ্বান মানুষরা সবাই আসেন। চর্চা করার যে সুযোগ, আসলে অমৃত আসে জ্ঞান থেকে। আর সেই জ্ঞান চর্চার যে জায়গা সেখানেই অমৃতকুম্ভ। এগুলি হল অনুকুম্ভ।
স্বামী স্বরূপানন্দ সরস্বতী HT Bangla-কে জানিয়েছেন এখানে চৈতন্যদেব স্নান করেছিলেন। এই ত্রিবেণী সঙ্গমে এসেছিলেন।এখানে কোথাও একটা তিনি স্নান করেছিলেন। আর সেখানে তাঁর দিব্য দর্শন হয়। একটা দেবী মূর্তি দেখেন। তার মধ্য়ে ত্রিবেণী মাতা দর্শন করেন। ত্রিবেণী অর্থাৎ গঙ্গা-যমুনা ও সরস্বতী।
তবে অনেকে বলেন ৭০০ বছর আগে এই ত্রিবেণী সঙ্গমে আসতেন সাধুসন্তরা। সেই ইতিহাস ফের জাগ্রত।