ইনস্টাগ্রামে আলাপ। কথা বলতে-বলতে গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। সেই টানেই নেদারল্যান্ডস থেকে হাজার-হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে ভারতের নদিয়ার তেহট্টে চলে এলেন এক ডাচ যুবক, নাম হেনরিক্স। উদ্দেশ্য একটাই নিজের ‘ভার্চুয়াল’ বান্ধবীর সঙ্গে একবার দেখা করা। তবে সেই সফরের শেষটা যেন হল একেবারে বলিউড সিনেমার মতো। স্বপ্নভঙ্গ, হতাশা আর শেষমেশ ফিরে যাওয়ার পরামর্শ।
আরও পড়ুন: ইনস্টায় প্রেম, স্বামী-সন্তান রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালাতে গিয়ে সব খোয়ালেন বধূ
গত সোমবার সকালে হেনরিক্স প্রথম পৌঁছান নদিয়ার মায়াপুরে। সেখান থেকে বাসে চেপে সোজা তেহট্টে যান। সময় তখন প্রায় সাড়ে ১১টা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বিদেশি যুবক, কালো টি-শার্ট, কালো ট্রাউজার পরে হাতে ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে থাকায় অনেকের কৌতূহল বাড়ে। এই সময়েই সামনের একটি স্কুল থেকে এক ছাত্রী জানলা দিয়ে ওই যুবককে দেখে হাত নাড়ায় বলেও দাবি স্থানীয়দের একাংশের। এরপর এক ব্যক্তি গিয়ে সরাসরি হেনরিক্সকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কে, কোথা থেকে এসেছেন, এখানে কী করছেন? তখনই জানা যায়, তিনি নেদারল্যান্ডস থেকে এসেছেন ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হওয়া বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই খবর দেওয়া হয় তেহট্ট থানায়। পুলিশ এসে কথা বলে হেনরিক্সের সঙ্গে। যাচাই করা হয় তাঁর পরিচয়পত্র ও ভিসা-সহ প্রয়োজনীয় নথি। তখনই স্পষ্ট হয়, যার সঙ্গে দেখা করতে তিনি এসেছেন সে মেয়েটি এখনও প্রাপ্তবয়স্ক নয়। স্কুলে পড়ে, বয়স ১৮-র নিচে। আইন মেনে পুলিশ তখন তাঁকে বুঝিয়ে বলে, এ দেশে নাবালিকার সঙ্গে এমন যোগাযোগ আইনসম্মত নয়। ফলে তাঁকে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে যাওয়ার আগে হেনরিক্স তাঁর ইনস্টাগ্রাম বান্ধবীর সঙ্গে একবার দেখা করেন। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বলেন। একটি পুতুল উপহারও দেন মেয়েটিকে। সূত্রের খবর, প্রায় সাত ঘণ্টা তেহট্টে ছিলেন তিনি। সব দিক খতিয়ে দেখার পরে কোনও আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে তাঁকে বিদায় জানায় প্রশাসন। পুলিশ সময়মতো হস্তক্ষেপ করায় বড় কোনও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই মত এলাকার মানুষজনের।