রাজ্যের ছোট-ছোট ছেলেমেয়েরা এবার হাতের মুঠোয় পেয়ে যাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বই। সূত্রের খবর, সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলের লাইব্রেরিতে মুখ্যমন্ত্রীর ১৯টি বই রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলে পৌঁছে গিয়েছে সেই তালিকা। কোন কোন বই রাখতে হবে, সেই তালিকাও দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে স্কুলের লাইব্রেবিতে মোট ৫১৫টি বই রাখতে হবে। সেই তালিকায় যেমন স্বামী বিবেকানন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আইনস্টাইনের লেখা বই আছে, তেমনই বেছে নেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর ১৯টি বইও।
মুখ্যমন্ত্রীর লেখা কোন কোন বই তালিকায় আছে?
১) কন্যার চোখে কন্যাশ্রী।
২) বিকেলটা হারিয়ে গিয়েছে।
৩) আমার পাহাড়।
৪) আমার জঙ্গল।
৫) চোখের তারা।
৬) জীবন সংগ্রাম।
৭) কুৎসাপক্ষ।
৮) এক পলকে, এক ঝলকে।
৯) সোজাসাপটা।
১০) কথায় কথায়।
১১) পরিবর্তন।
১২) নন্দীমা।
১৩) অনশন কেন?
১৪) জাগো বাংলা।
১৫) একান্তে।
১৬) আন্দোলনের কথা।
১৭) অশুভ সংকেত।
১৮) অনুভূতি।
১৯) সেরা মমতা একত্র।
প্রতিটি স্কুলকে ১ লাখ টাকার অনুদান
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলের লাইব্রেবির জন্য এক লাখ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার জন্য মোট পাঁচটি সেটের সুপারিশ করেছে স্কুলশিক্ষা দফতর। প্রথম সেটে আছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, মালদা, শিলিগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুরের নাম।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ‘অন্যতম কঠিন’ ফিজিক্স পরীক্ষায় বাজিমাত ৩ বাঙালি পড়ুয়ার! ইতিহাস ভারতের
দ্বিতীয় সেটে আছে বাঁকুড়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়া। তৃতীয় সেটে নাম আছে দক্ষিণ দিনাজপুর, হুগলি, নদিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের। চতুর্থ সেটে ব্যারাকপুর, হাওড়া, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার নাম আছে। আর পঞ্চম সেটে আছে উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুর।
আরও পড়ুন: নিটের প্রথম একশোয় বাংলার মাত্র ৩ জন, তবে ডাক্তারিতে সুযোগ পেলেন বেশি, টপার কে?
অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা, ক্ষুব্ধ শিক্ষক মহল
তবে যাবতীয় বিতর্ক শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই রাখা নিয়ে। সেই নির্দেশের তীব্র বিরোধিতা করেছে শিক্ষক মহল। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, ‘আমরা নজিরবিহীন এই নির্দেশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে এই শর্ত তুলে নিতে হবে। পরাধীন ভারতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস চ্যান্সেলর থাকাকালীন আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে অর্থ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার স্বাধিকার হরণের শর্ত দিয়েছিল ইংরেজ শাসক।'
আরও পড়ুন: কলেজে ভর্তি পোর্টাল খোলা নিয়ে বিতর্ক, নির্দেশ অমান্যের অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা
সেইসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, ‘আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। (অথচ) আজ আমরা স্বাধীন দেশে শাসকের একইরকম পদধ্বনি শুনছি। এ অত্যন্ত লজ্জার। লাইব্রেরির মতো পবিত্র জায়গায় সরকারি অনুদানের সঙ্গে কোনও শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে আমরা। পাশাপাশি এই শর্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি।’