আগামী ৮ জুলাই রাজ্যজুড়ে শুরু হবে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর তার জেরে এখন রাজ্য–রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। কারণ এই নির্বাচন উপলক্ষ্যে নেতাদের ভাষণে আগুন ঝরছে। সুকান্ত–শুভেন্দু থেকে কাজল শেখ—সকলেই গরমাগরম কথা বলছেন সভায়। এখন বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডল নেই। এই পরিস্থিতিতে হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই সেখানের মাটিতে দাঁড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কাজল শেখ এবার বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি দিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের প্রার্থী কাজল শেখ এখন অনুব্রতর অনুপস্থিতিতে বাড়তি দায়িত্ব পেয়েছেন। তাই নানুরের কর্মীসভা থেকে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘খেলা হবে।’ তাই প্রশ্ন উঠছে, অনুব্রতর শূন্যস্থান কি পূরণ করবেন কাজল শেখ?
এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী গোষ্ঠীতে ছিলেন কাজল শেখ। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হয়ে তিহাড় জেলে বন্দি হতেই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন কাজল শেখ। তার উপর এখানে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে কোর কমিটি গড়ে দিয়ে গিয়েছেন। সেখানে জায়গা পেয়েছেন কাজল শেখ। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের টিকিট পেয়েছেন। সব মিলিয়ে কাজল শেখ এখন দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আর তাই বীরভূমে দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের ঢঙে হুঙ্কার দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের প্রার্থী কাজল শেখ। তাঁর কথায়, ‘সময় কথা বলবে। যদি তারা আসে। আসতে বলুন, দেখতে পাবেন কী খেলা হবে।’
ঠিক কী বলেছেন কাজল? এদিন নানুরের বাসাপাড়ায় কর্মীসভা করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, বোলপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অসিত মাল। তাঁদের উপস্থিতিতেই বিজেপির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে কাজল শেখ বলেন, ‘যদি ধরতে পারে, রাতের অন্ধকারে, এখন কথাটা বলব না। তখন তোমরা বুঝতে পারবে। রাতের অন্ধকারে প্রচার করতে নয়। বিজেপির কাছে প্রচুর টাকা আছে। রাতের অন্ধকারে যারা আমার আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভাই আছে, যাদের মধ্যে শিক্ষার হারটা কম, তাদেরকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে, মদে আসক্ত করে, ভুল পথে যারা পরিচালনা করবে, তাদেরকে দেখে নেব। যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করবে, তাদেরকে দেখে নেব। দেখে নেবই।’
আরও পড়ুন: কোনও বুথে থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী! পঞ্চায়েত নির্বাচনে বুথ সামলাবে রাজ্য পুলিশ
আর কী বলছে বিজেপি? কাজল শেখের মন্তব্যের পর জোর আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বীরভূমে। তাই পাল্টা দিয়েছে বিজেপিও। বীরভূম সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি ধ্রুব সাহা সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘কাজলবাবু ওত যদি আপনার ভয়, তাহলে ওখানে আমাদের জেলার যিনি কাজ দেখছেন, অষ্টম মণ্ডলকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে প্রার্থী দিতে বারণ করলেন কেন? আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কেষ্টবাবু তো এখন জেলে। তাহলে আপনার ভয় কীসের? বড় জোর তিহাড় গিয়েছেন। বেশি ছটফট করলে আপনাকেও একদিন বিহার যেতে হবে।’ হুঁশিয়ারির পাল্টা হুঁশিয়ারিতে এখন সরগরম বীরভূম।