বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। তবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক জটিলতা মানসিকভাবে প্রভাবিত করেছে অভিনেত্রী সেলিনা জেটলিরও। কারণ বলি অভিনেত্রী সেলিনারও জন্ম সেনা জওয়ান পরিবারে।
সেলিনা হলেন প্রয়াত কর্নেল বিক্রম কুমার জেটলির মেয়ে এবং প্রয়াত কর্নেল এরিক ফ্রান্সিসের নাতনি। এরাঁ দুজনেই ভারতীয় সেনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সম্প্রতি উধমপুরের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলার খবরে দুঃখ পেয়েছেন সেলিনা।
ঠিক কী বলেছেন সেলিনা জেটলি?
নিউজ১৮-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেলিনা বলেন, ‘শুনলাম আমার শৈশবের স্মৃতিতে ভরা উধমপুরের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা হয়েছে। এই খবটার শুনে আমার চোখে জল এসে যায়। আমার জন্য এটা শুধুই খবর নয়, এই বিষয়টি ব্যক্তিগত গভীর বেদনার।’
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে, কর্নেল সোফিয়া কুরেশি নিশ্চিত করেন যে পাকিস্তান শ্রীনগর, অবন্তীপুরা এবং উধমপুরে স্কুল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে আক্রমণ করেছে। আর সেই খবর পৌঁছে যায় সেলিনার কানেও। সীমান্তে সৈন্যদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে সেলিনার মনে পড়ে যায়, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তাঁর বাবার সাহসিকতার কথা।
সেলিনা বলেন, ‘১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় বাবার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। তখন ভাদুরিয়ার যুদ্ধের সময় তিনি গুরুতর আহত হন, গুলিবিদ্ধ হন। আজীবন এই ক্ষত নিয়েও তিনি অতুলনীয় গর্ব ও সম্মানের সঙ্গী জাতির সেবা করে চলেছিলেন, অবশেষে মর্যাদাপূর্ণ ১৬ কুমায়ুন রেজিমেন্টের অধিনায়ক হন। তাঁর সাহসিকতার জন্য তিনি দুটি ক্ষত পদক এবং সেনা পদক পেয়েছিলেন’।
আরও পড়ুন-টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন, এবার অনুষ্কাকে নিয়ে বৃন্দাবনে বিরাট
সেলিনা আরও বলেন, ‘আমি যখন ১৯৮০-র দশকে আমি যখন জন্মগ্রহণ করি তখন আমি ফ্রন্টলাইন পদাতিক বাহিনীর মেয়ে এবং নাতনি। প্রতিবার আমি যখন ওদের বিদায় জানাতাম, তখন এটা জেনেই বড় হয়েছি যে এটা শেষ বিদায়ও হতে পারে। আমি দেখেছি সেনার ইউনিফর্ম আমার বাবা এবং দাদুর উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে কতটা প্রভাব ফেলে। ৪১ বছর বয়সে আইইডি বিস্ফোরণের পর আমার বাবা এক কানের শ্রবণশক্তি সম্পূর্ণ চলে যায়, তবুও জাতির প্রতি তাঁর আনুগত্য কখনও কমেনি। লড়াই সত্ত্বেও, আমি একজন সৈনিক পরিবারের শক্তি মনে নিয়েই বড় হয়েছি।’
সেলিনা জানান, ‘আমার দাদুও একজন অত্যন্ত সম্মানিত অফিসার ছিলেন, যিনি ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধ এবং ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। আমার পরিবারে সবসময় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা কথা বলে শেখানো হত না, এটা প্রতিদিনই পালন করা হত।’