ঐতিহাসিক শহর চক্রপানিপুর, আর সেখানেই রয়েছে আসারু নামে একটি অজানা গ্রাম৷ বিতর্কিত এক রিপোর্টিংয়ের জন্য এক ঘরে হয়ে যাওয়া সাংবাদিক মৈথিলী এক প্রাচীন মন্দিরের সন্ধানে এই আসারু গ্রামে পৌঁছয়। আর তারপর এই গল্প নাটকীয় মোড় নেয়। যখন মৈথিলী জানতে পারে তার আসার আগে গ্রামে রহস্যজনকভাবে মারা গিয়েছে আসারু গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত এক প্রফেসর দেবারি রক্ষিত। কিন্তু কে এই প্রফেসর রক্ষিত? মন্দিরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কই বা কী? কেনই বা তাঁকে মরতে হল?
এমনই একটি গল্প নিয়ে আসতে চলেছে নতুন ছবি 'কাল্পনিক'। অর্ক মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় আগামী ১১ জুলাই আসতে চলেছে এই ছবি।
ছবিতে মহিলা সাংবাদিক মৈথিলীর ভূমিকায় দেখা যাবে শতাক্ষী নন্দীকে। ছবি নিয়ে শতাক্ষী বলেন,- ‘এটা রাজনৈতিক থ্রিলার। বাংলায় অনেক বছর এমন ছবি দেখা যায়নি । এইরকম একটা ছবির অংশ হতে পেরে আমি খুশি। মৈথিলী একজন সাংবাদিক । একজন স্বাধীন মানুষ, যে কিনা নিজের পরিচয় তৈরি করতে চায় । তাই কাজের নেশায় ছুটে চলে। আমি আগে যে সব চরিত্র করেছি তার থেকে এটা একেবারে আলাদা । এই চরিত্রের লুক, চরিত্রের গঠন সবই আলাদা । আমাদের পরিচালক অর্ক মুখোপাধ্যায় বিদেশে থাকেন । আমাদের টাইম জোন আলাদা । কিন্তু কাজের জন্য সবসময় ডিরেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি । কীভাবে চরিত্রটাকে মেলে ধরা যায় সেই নিয়ে আলোচনা করেছি’।
আরও পডুন-সুদীপ্তা চক্রবর্তীর শোয়ে এবার হাজির অনীক ধর! কী ‘লক্ষ্মীলাভ’ করলেন গায়ক?

শতাক্ষী আরও বলেন, ‘মৈথিলী একটা খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে কোণঠাসা হয়ে যায়। সে পরের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখে সে একটা গেমের পার্ট হয়ে গিয়েছে। এই ছবির জন্য আমি স্কুটি, বাইক, বুলেট সব চালানোই শিখেছি। কেন না মৈথিলী খবরের খোঁজে কলকাতা থেকে চক্রপানিপুর চলে যায় বাইক চালিয়ে । সেখানকার মানুষের সঙ্গে আলাপ হয় । মৈথিলী সাংবাদিক নাকি গোয়েন্দা হয়ত ছবিটা দেখে দর্শকের মনে এই প্রশ্ন উঠবে। এই ছবির জোর হল এর গল্প। পুরুলিয়া, কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার রাস্তায় শুটিং করেছি। এই ছবিটা প্রাসঙ্গিক এটুকু আমি বলতেই পারি।’

'কাল্পনিক'-এর পরিচালক অর্ক বলেন, ‘এই ছবিটা আমি নিজের জমানো টাকা দিয়ে বানিয়েছি । বিশ্বাসের উপর দাঁড়িয়ে আছে ছবিটা । এই বিষয়টা খুব প্রয়োজনীয় এই সময়ে । প্রফেসর রক্ষিত, মৈথিলী, দিলীপ-সহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে এই ছবি কীভাবে এগিয়েছে সেটাই দেখার । দিলীপের চরিত্র দেখলে বুঝবেন, চারপাশের পরিবেশ পরিস্থিতি কীভাবে তাকে প্রভাবিত করে । ওদিকে একটি ডায়েরিকে ভিত্তি করে মৈথিলী এগিয়ে যায় কিছু জিনিস জানার জন্য । অবশেষে সে নিজেও দাবার ঘুঁটিতে পরিণত হয় কীভাবে, সেটাই দেখার।’

ছবিতে প্রফেসর রক্ষিতের চরিত্রে রয়েছেন রজতাভ দত্ত । ছবি নিয়ে তিনি বলেন, 'গত বছর ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানো হয় 'কাল্পনিক' । প্রশংসিত হয়েছে । অবশেষে ১১ জুলাই মুক্তি পেলে চলেছে ছবিটি। আমাদের পরিচালক অর্ক বিদেশে থাকেন। চাকরি ছেড়ে দিয়ে সেই পয়সা দিয়ে ফ্ল্যাট না কিনে এই ছবিটা বানিয়েছেন তিনি। পুরুলিয়ার ভূমিপুত্ররাও রয়েছেন এই ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বিশ্বাসের ছবি 'কাল্পনিক'।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবিতে শতাক্ষী নন্দী, রজতাভ দত্ত ছাডা়ও রয়েছেন সাহিদুর রহমান, সায়ন ঘোষ ও অন্যান্যরা । ছবির সঙ্গীত পরিচালক কিশলয় রায় । সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন শুভদীপ দে । ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার সোম চক্রবর্তী । ছবিটির প্রযোজনা করছেন, অর্ক মুখোপাধ্যায়, অমৃতা চক্রবর্তী ও ফেবলস ক্রেডল।