Nal Sankranti 2024: মঙ্গলবার নল বাঁধা। বুধবার সংক্রান্তির দিন সেই নল মাটিতে পোঁতা। নল সংক্রান্তির পরিচিত নিয়ম বলতে এই। যা অনেকের কাছে ‘ডাক সংক্রান্তি’ নামেও পরিচিত। গ্রাম বাংলার প্রাচীন লোকসংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম উৎসব ছিল এটি। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগ। ধীরে ধীরে লোকসংস্কৃতির মাহাত্ম্য কমে আসছে। শহুরে উদযাপনের উপরেই অনেক বেশি লাইম লাইটের আলো। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে নল সংস্কৃতির মতো গ্রাম বাংলার সমৃদ্ধ লোকাচারও।
রাজ্যের কিছু জেলায় পালিত হয় এই উৎসব
টিম টিম করে যেটুকু আচারপালনের বাতি জ্বলছে আজও, তা মূলত নদীয়া, মেদিনীপুর, হাওড়া অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামগুলিতে। এটি আদতে কৃষি উৎসব। ঠিক যেমন নবান্ন উৎসব পালন করা হয় যত্নসহকারে। এই উৎসবও তাই। আশ্বিনের শেষ মানেই হেমন্ত। হালকা শীতের সময়। পুজোর আমেজ ধীরে ধীরে এই সময় কমে আসে। এখনকার কথা অবশ্য আলাদা। উৎসবপ্রিয় মানুষ প্রায় প্রতিটি দিনই কোনও না কোনও উপলক্ষ খোঁজে। পুজো বা কোনও তিথি পেলেই যথেষ্ট, তাকে ঘিরেই উৎসবের রূপ দিতে তৎপর তারা। তবে এর বাইরেও গ্রাম বাংলার একটি বিশাল অস্তিত্ব রয়েছে। যেখানে বহুকাল ধরে পালিত হয়ে আসছে স্থানীয় লোকাচার। পালনের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে রূপ পেয়েছে উৎসবের। নল সংক্রান্তি তারই পরিচায়ক।
ধানকে গর্ভস্থ নারীরূপে পুজো
সশীর্ষ ধান। ধানের গর্ভে থাকে আমাদের খাদ্য। ক্ষুন্নিবৃত্তির প্রধান উপাদান। এই সশীর্ষ ধানকেই পুজো করা হয় নল সংক্রান্তির দিন, নল বেঁধে। মনে করা হয়, সশীর্ষ ধান আসলে গর্ভস্থ নারী। তাঁর প্রসবের মধ্যে দিয়ে জগতে শুরু হবে মঙ্গলময় অধ্যায়।
আরও পড়ুন - Laxmi Puja Wishes: মা লক্ষ্মীর কৃপায় ঘুচে যাক অনটন, কোজগরী পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানান পরিজনদের
নল সংক্রান্তির সময় ধানে সবেমাত্র চাল আসতে শুরু করে। ধানের ভিতর থাকে দুধের মতো অংশ। যা পোকা সহজেই শুষে নেয়। তাই এই সময় পোকার উপদ্রবও বেশি দেখা যায়। এই পোকার হাত থেকে বাঁচতেই নল উৎসব। সংক্রান্তির আগের দিন কালমেঘ, নিমপাতার মতো দশরকমের ভেষজ সংগ্রহ করে আনা হয়। এবার সেগুলি কুচি কুচি করে কেটে নলগাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। এই সময় আবার মুখে কথা বলা মানা। এই নলই পরদিন ধানজমির ঈশান কোণে পুঁতে দেওয়ার নিয়ম। সঙ্গে উচ্চারিত হয় - নল পড়ল ভুঁয়ে/যা শনি তুই উত্তর মুয়ে। ধানজমিতে পোঁতার পর নিমপাতা, হলুদ আর আতপ চালের বাটা আলই খাওয়ানো হয় বাড়ি বাড়ি। এমনকি গরুদেরও খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। বিশ্বাস, এতে যাবতীয় রোগের উপশম সম্ভব।