আবারও রক্তে ভাসল অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। মেক্সিকোতে ধর্মীয় উৎসবে বন্দুকবাজের হামলায় কমপক্ষে অন্তত ১২ জনের মৃত্যুতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।আহতের সংখ্যা ২০। হামলা চালিয়েই নিরাপদে গা ঢাকা দেয় বন্দুকবাজরা। হামলায় জড়িতদের ধরতে জোর তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
সূত্রের খবর, সেন্ট জন দ্য ব্যাপটিস্টের সম্মানে গুয়ানাজুয়াতোর ইরাপুয়াতো শহরের বাসিন্দারা যখন নাচগান এবং মদ্যপান করছিলেন, তখন এই হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যেকেই খুশির মেজাজে ছিলেন। আচমকা ধর্মীয় উৎসবের মাঝেই একদল বন্দুকবাজ উপস্থিত হয়। কেউ কিছু বোঝার আগেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। যার জেরে ঘটনাস্থলে তীব্র বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। লোকজন আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করেছিলেন।
ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ১২ জনের। গুলিবিদ্ধ হন আরও বেশ কয়েকজন।খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। ঘিরে ফেলা হয় গোটা এলাকা। ইতিমধ্যে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আপাতত সেখানেই তাঁরা চিকিৎসাধীন। তবে পুলিশ আসার আগেই আততায়ীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়। বন্দুকবাজের খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের মধ্যে একজন নাবালক। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হলেও এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-রাজের সঙ্গে প্রেম সোনমের! মেঘালয়কাণ্ডে সম্পর্কের কথা কবুল দুই অভিযুক্তের
ইরাপুয়াতোর কর্মকর্তা রোডলফো গোমেজ সার্ভান্তেস এক সংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ১২ নিহত হয়েছেন ৷ আরও প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম ৷ এই হামলার তীব্র নিন্দা করে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে।’পুরনো শত্রুতা নাকি অন্য কারণে ওই শুট-আউটের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেক্সিকোর অন্যতম সংবেদনশীল একটি অঞ্চল হল গুয়ানাজুয়াতো। এর আগেও এই রাজ্যের বুকে একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে স্থানীয় একটি গির্জার উৎসবেও হামলা চালায় এক বন্দুকবাজ। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ৭জনের।
আরও পড়ুন-রাজের সঙ্গে প্রেম সোনমের! মেঘালয়কাণ্ডে সম্পর্কের কথা কবুল দুই অভিযুক্তের
উল্লেখ্য, মেক্সিকোর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রাজ্য হিসাবেই পরিচিত গুয়ানাজুয়াতো। সমৃদ্ধ শিল্প কেন্দ্র এবং জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে যেমন পরিচিতি রয়েছে, তেমনই মাদক কারবার ঘিরে বিভিন্ন মাদক পাচারকারী গোষ্ঠীর মধ্যে গুলির লড়াই জলভাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। মূলত সান্তা রোজা ডি লিমা গ্যাং এবং জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেলের মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের কারণে গত কয়েক বছর ধরে বধ্যভূমি হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে গুয়ানজুয়াতো। মাদক কারবার ঘিরে বিভিন্ন গ্যাংয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ২০০৬ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত পাঁচ লক্ষের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।