ট্রেনে যাত্রীদের লুটপাটের অভিযোগ নতুন নয়। তবে এবার চলন্ত মালগাড়িতে উঠে গার্ডের কামরায় ঢুকে ভয় দেখিয়ে সবকিছু লুটপাট করার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। চমকে যাওয়ার মতো এই ঘটনাটি ঘটেছে চলতি মাসেই ডানকুনি ও ভট্টনগর স্টেশনের মাঝের নির্জন রেলপথে। অভিযোগ, মালগাড়ির গতি মন্থর হতেই চারজন দুষ্কৃতী হঠাৎ উঠে পড়ে ট্রেনে। গার্ডকে ঘিরে ধরে তাঁর হাত থেকে রেলের ওয়াকিটকি সেট, নগদ টাকা এবং ট্রেনে থাকা অন্যান্য সামগ্রী লুট করে দুষ্কৃতীরা। (আরও পড়ুন: জেলায় জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া, জারি সতর্কতা)
আরও পড়ুন: অবসরের দিনে শেষ ট্রেন চালিয়ে ফিরছিলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাংলার মালগাড়ির চালকের
ঘটনার পরে রেলের পক্ষ থেকে বেলুড় জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে রেল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অঞ্চলে স্থানীয় এক দুষ্কৃতী দলের সক্রিয়তা দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশ ও রেল সূত্রে খবর, ১৩ জুন রাতে জনাই রোড স্টেশন থেকে ডিউটি শুরু করেছিলেন মালগাড়ির সিনিয়র গার্ড সৌমেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রেনটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী ছিল এবং সেটি নির্দিষ্ট রুট ধরে ডানকুনি থেকে আন্দুলের দিকে যাচ্ছিল। পথে ভট্টনগর স্টেশনের একটু আগেই, নির্জন এলাকায় ট্রেনটির গতি অনেকটাই কমে যায়। ঠিক তখনই গার্ডের কামরায় ঢুকে পড়ে চার দুষ্কৃতী। অভিযোগ, দু’জন বাইরের গেট পাহারা দিচ্ছিল, আর বাকি দু’জন ঢুকে পড়ে ভিতরে। তাদের প্রত্যেকের হাতেই ছিল মোটা লাঠি। একজনের কাছে একটি ব্যাগও ছিল, যাতে ছুরি বা অন্য কোনও ধারালো অস্ত্র ছিল বলে সন্দেহ। (আরও পড়ুন: ২৫% বকেয়া ডিএ মেটাবে না সরকার? ঘটনাক্রমে এল নয়া মোড়, মাথায় হাত পড়বে কর্মীদের?)
তাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করা। গার্ডের সামনেই থাকা ওয়াকিটকি সেটটি কেড়ে নেয় তারা। এরপর শুরু হয় তল্লাশি ও লুটপাট। নগদ টাকা ছাড়াও কামরায় থাকা আরও কিছু সামগ্রী হাতিয়ে নেয় তারা। গার্ডের মোবাইলটি একটি আড়াল জায়গায় রাখায় সেটি পায়নি দুষ্কৃতীরা। পুরো ঘটনার সময় ওই এলাকা ছিল একেবারে অন্ধকার ও নির্জন। কোনওরকম সাহায্য পাওয়ার উপায় ছিল না। গার্ড পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েন। কিছু দূর যাওয়ার পর অভিযুক্তরা মালগাড়ি থেকে নেমে যায়। এরপরই গার্ড তাঁর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে রেল দফতরে খবর দেন।
তদন্তে নেমে বেলুড় জিআরপি জানতে পেরেছে, ওই অঞ্চল ঘিরে একটি দুষ্কৃতীচক্র নিয়মিত রেক ভেঙে চুরি ও ছিনতাই চালায়। আগেও একাধিক গার্ড এই ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন। তবে সেসব সময় অভিযোগ না ওঠায় বিষয়টি সামনে আসেনি। এবার সরাসরি অভিযোগ জমা পড়ায় সক্রিয়ভাবে তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।