গত ১৪ জুন থেকে কেরলের তিরুঅনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির একটি এফ-৩৫বি লাইটনিং টু যুদ্ধবিমান।মার্কিন লকহিড মার্টিন নির্মিত এই পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ ফাইটারটির দাম ১১০ মিলিয়ন ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯২০ কোটি টাকারও বেশি। সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিমানটিকে মেরামত করতে পারছে না ব্রিটেন।তাই যুদ্ধবিমানটিকে আংশিকভাবে ভেঙে একটি সামরিক পণ্যবাহী বিমানে করে ব্রিটেনে ফেরত নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
সিএনএন-নিউজ১৮-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রথমে যুদ্ধবিমানটির হাইড্রলিক সিস্টেমে ত্রুটি দেখা যায়।পরে তা স্টার্টিং সিস্টেমে উন্নীত হয়। এটি মেরামতের জন্য ইঞ্জিনিয়াররা একাধিকবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। তাই ফিফথ জেনারেশনের এই স্টেলথ জেটটি এখনও তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরেই গ্রাউন্ডেড রয়েছে। এখনও সেটিকে ওড়ার মতো অবস্থায় নিয়ে আসা যায়নি।বর্তমানে বিমানটির কোন কোন যন্ত্রাংশ ভেঙে ফেলা হবে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।তবে ব্রিটিশ রয়্যাল নেভির ইঞ্জিনিয়ারিং দল শিঘ্রীই ভারতে আসছে।যুদ্ধবিমানটি মেরামতের জন্য ৩০ জন ইঞ্জিনিয়ারের একটি দলের তিরুবনন্তপুরমে আসার কথা রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত
ব্রিটিশ নৌবাহিনীর বিমানবাহী রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অফ ওয়েলস থেকে ওড়া এই এফ-৩৫বি যুদ্ধবিমানটি ভারত মহাসাগরে যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল। বিমানটি কেরল উপকূল থেকে আনুমানিক ১০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থানরত ক্যারিয়ার থেকে রওনা দিয়েছিল। রাডার ডেটা ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি স্কোয়াক ৭৭০০ জরুরি সংকেত পাঠায়, যার অর্থ হল গুরুতর বিপদ। এরপরই তড়িঘড়ি তিরুঅনন্তপুরমে জরুরি অবতরণে অনুমতি দেওয়া হয়।প্রথমে জানা গিয়েছিল, জ্বালানি কমে যাওয়ায় জরুরি অবতরণ হয়েছে। পরে অবশ্য ব্রিটিশ প্রযুক্তিবিদরা জানান, বিমানের হাইড্রলিক সিস্টেমে ত্রুটি ধরা পড়েছে, যার জেরে তা আর টেক-অফ করতে পারছে না।
ভারতীয় বায়ুসেনা জরুরি অবতরণের পর পরিকাঠামোগত সবরকম সহায়তা করে, এমনকি বিমানে জ্বালানি ভরাও হয়।ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষও ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু ব্রিটিশ রক্ষণাবেক্ষণ দল এতদিনেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। যুদ্ধবিমানটি লকহিড মার্টিন নির্মিত এবং এটি সংক্ষিপ্ত রানওয়ে থেকে উড়তে ও উল্লম্বভাবে অবতরণ করতে পারে, যাকে স্টোভল প্রযুক্তি বলে। এর স্টেলথ ক্ষমতা রয়েছে, অর্থাৎ রাডারে ধরা পড়ে না সহজে। এই বিমান ন্যাটো-ভুক্ত অনেক দেশ, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস ব্যবহার করে।