মাত্র ১৪ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। তারফলে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে উঠেছিল নাবালিকা। সেই ঘটনাতেই বৃহস্পতিবার দোষীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বর্ধমানের পকসো আদালত। পাশাপাশি, আদালতের রায়ে এক লক্ষ টাকা জরিমানাও ধার্য হয়েছে। জরিমানা না দিলে আরও এক বছরের জেল খাটতে হবে দোষীকে।
আরও পড়ুন: শিশুকে ধর্ষণ-খুন, ২০১৩-র ঘটনায় দোষীর মৃত্যুদণ্ড রদ, যাবজ্জীবন সাজা দিল হাইকোর্ট
বিচারক দেবশ্রী হালদার রায়ে জানান, জরিমানার টাকা নির্যাতিতার জন্য ব্যয় করতে হবে। এছাড়া পকসো আইনের নিয়ম অনুযায়ী, নাবালিকার পুনর্বাসন ও কল্যাণের জন্য তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। এই মামলার সরকারি কৌঁসুলি গৌতমকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, অভিযুক্ত ধর্ষিতার পূর্বপরিচিত। সেই বিশ্বাসের সুযোগ নিয়েই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানির শেষে আদালত অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ১৩ অগস্ট নাবালিকা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। পরীক্ষা করার পর চিকিৎসক জানান, সে অন্তঃসত্ত্বা। এই কথা শুনে হতবাক পরিবার জানতে চায়, এমন কী ঘটেছিল! তখন মেয়েটি জানায়, ঘটনার মাস দুয়েক আগে পাশের বাড়ির এক পরিচিত ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করেছিল। এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরদিনই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও পরে সে জামিনে ছাড়া পায়।
২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গাইনি বিভাগে গর্ভপাত করানো হয় মেয়েটির। তখন তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়। এরপর করা হয় ডিএনএ টেস্টও। তদন্তের দায়িত্বে থাকা অফিসার মীর মুজিবুর রহমান ওই বছরের ৩১ অক্টোবর চার্জশিট জমা দেন। পরে ২০১৭ সালের ৯ অগস্ট মামলার সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটও আদালতে পেশ করেন তিনি। এই মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষ্য দেন। তাঁদের বক্তব্য বিচারক গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেন। সব তথ্য ও প্রমাণ বিচার করে অভিযুক্তকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬(এ)(এফ) ও পকসো আইনের ৪ এবং ৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সাজা ঘোষণার সময় বিচারক জানান, অভিযুক্ত যতদিন বিচার প্রক্রিয়ার জন্য জেলে ছিলেন, সেই সময়সীমা সাজার মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।