বর্ষা কমলেও ঘাটাল এখনও জলমগ্ন। ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ অংশ এখনও প্লাবিত। জলমগ্ন বহু গ্রাম, ডুবে রয়েছে ঘাটাল পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। এমন পরিস্থিতিতে আজ রবিবার সকালে সেখানে প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এরপর বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। সেখানে দাঁড়িয়েই ডিভিসির বিরুদ্ধে তুলোধোনা করেন মন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, না জানিয়েই জল ছেড়েছে ডিভিসি।
আরও পড়ুন: টানা বৃষ্টি, ডিভিসির জল ছাড়ার ফলে বাড়ছে বিপদ, জেলা শাসকদের সতর্ক করল নবান্ন
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী বলেন, ডিভিসি আগে থেকে না জানিয়ে একেবারে ৭১ হাজার কিউসেক জল ছেড়ে দিয়েছে। এবিষয়ে চুক্তির কথা মনে করিয়ে তিনি জানান, পূর্ব নির্ধারিত চুক্তি অনুযায়ী, জল ছাড়ার কথা আগে জানাবে ডিভিসি। কথা ছিল ৬০ হাজার কিউসেক ছাড়বে। কিন্তু তা মানেনি ডিভিসি। আর তাতেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার বিষয়টি নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে।
মন্ত্রীর দাবি, ডিভিসিকে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আপত্তি জানানো হয়েছে। প্রমাণও হাতে রয়েছে, ফলে দায় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, জেলার ঘাটাল, চন্দ্রকোনা ১ এবং চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের মোট ১৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১৮৮টি গ্রাম। সরকারি হিসেবে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বহু পরিবারকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। চলছে খাদ্য, জল ও পোশাক বিতরণ। এখনও পর্যন্ত ৪৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। তার অনেকগুলি এখনও চালু আছে। আশ্রয় শিবিরে থাকা মানুষদের জন্য চালু করা হয়েছে কমিউনিটি কিচেন। পাঠানো হয়েছে পানীয় জলের ট্যাঙ্কার। দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার জামাকাপড়।
স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ ও মেডিক্যাল টিম। খাদ্য সরবরাহে বরাদ্দ হয়েছে ৫৫ মেট্রিক টন চাল। সেচমন্ত্রীর দাবি, এই বন্যায় প্রায় ২২০৭ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। প্রশাসনের প্রত্যেক স্তরে সবাই একসঙ্গে কাজ করছে। তিনি আরও জানান, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ চলছিল। কিন্তু হঠাৎ এই ভয়ঙ্কর বান পরিস্থিতির কারণে কাজ থেমে গেছে। ১৯৭৮ সালের পর এই রকম হড়পা বান দেখা যায়নি।