অশোকনগরে কিডনি পাচার চক্রে নাম জড়াল এক তৃণমূল কর্মীর। পুলিশ শুক্রবার রাতে আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম শিশির কর্মকার। তিনি শুধু পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীই নন, স্থানীয় এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবেও পরিচিত। ঘটনাটি সামনে আসতেই রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও তৃণমূল তাঁর সঙ্গে কোনও সংযোগ মানতে নারাজ।
আরও পড়ুন: কাজ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে UP-তে নিয়ে গিয়ে 'কিডনি বিক্রি', বারুইপুরে আটক ২
গ্রেফতার হওয়া তিনজনের মধ্যে বাকি দুজনের নাম হল সুরজিৎ ঘোষ এবং কালাচাঁদ দাস। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তিনজনই সুদখোর ‘শীতল’-এর চক্রে যুক্ত। ঋণ শোধে ব্যর্থ ব্যক্তিদের কিডনি বিক্রি করতে চাপ দেওয়া হত বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযোগ, শিশির দীর্ঘদিন ধরে ‘স্বাস্থ্যকর্মী’ পরিচয়ের আড়ালে দাতাদের বিশ্বাস অর্জন করত। অর্থনৈতিক দুর্দশায় থাকা মানুষদের বোঝাত একটা কিডনি দিলেও শরীরে ক্ষতি হয় না, বরং ঋণও মিটে যাবে, তার সঙ্গে মিলবে বাড়তি অর্থও।
বাকিরা, অর্থাৎ সুরজিৎ ও কালাচাঁদ শীতলের হয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের দায়িত্বে ছিল। তাঁরা ঋণ শোধে ব্যর্থ ব্যক্তিদের কিডনি দান করতে বাধ্য করত। তবে বিতর্কের কেন্দ্রে শিশির। কারণ, গত পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও অশোকনগর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার জানান, শিশির তৃণমূলের কেউ নয়। দলের নামে অকারণে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক দাতার ক্ষেত্রে জেলা থেকে অনুমতি না পেলেও রাজ্য স্তরে ছাড়পত্র জোগাড় করা হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই কিডনি প্রতিস্থাপনের চেষ্টার খবর পেয়ে তৎপর হয় অশোকনগর থানার পুলিশ। পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তদন্তে উঠে আসে ধৃতদের সক্রিয় ভূমিকা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, দুটি আলাদা অভিযোগে মামলা চলছে। তবে দুটি ক্ষেত্রেই মূল পাচার-চক্রটি এক। জেলা পুলিশ সুপার জানান, প্রথম মামলায় ধৃত শীতল ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় দাতা আলাদা হলেও বাকি গ্যাং সদস্যরা একই। তদন্ত চলছে।