চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। গত এক সপ্তাহ ধরে আমদানি কার্যত বন্ধ, রফতানিতেও ধস নেমেছে। ফলে সীমান্তবর্তী এলাকার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সাধারণ কর্মীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ।
আরও পড়ুন: বনগাঁ-বাগদা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানো শুরু, জমি পেয়েই কাজে নামল বিএসএফ
শুল্ক দফতর ও স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত প্রতিদিন ৬০-৭০টি ট্রাক বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসে। তবে গত সাত দিনে এসেছে মাত্র ১৬টি ট্রাক। মূলত বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া মশারি নেট, কটন ওয়েস্ট, ফিশিং নেট, কাচসহ একাধিক পণ্যের আনাগোনা একপ্রকার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে প্রতিবেশী দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় দু’কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। মাসের শেষে যার পরিমাণ ৬০ কোটিরও বেশি ছুঁতে পারে বলে আশঙ্কা।
ভারত সরকারের নতুন নির্দেশে পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোনও স্থলবন্দর দিয়ে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য যেমন রেডিমেড গার্মেন্টস, ফল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও প্লাস্টিক সামগ্রী আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। এখন শুধু কলকাতা ও মুম্বই বন্দরের মাধ্যমেই এই পণ্যগুলি ভারতে আনার অনুমতি রয়েছে।
এদিকে, রফতানিও কমেছে। সাধারণত চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০০টি ট্রাক বাংলাদেশে যায়। কিন্তু গত সাত দিনে মোট ৬২৮টি ট্রাকই সেখানে পৌঁছেছে, অর্থাৎ গড় অনেকটাই কমেছে। এই মুহূর্তে রফতানির মূল ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে বোল্ডার। ব্যবসা কমার প্রভাব পড়েছে শ্রমিকদের ওপরও। লোড-আনলোডের কাজে যুক্ত থাকা শত শত শ্রমিকের কাজ অর্ধেকে নেমে এসেছে। মেখলিগঞ্জ আইএনটিইউসি-র সভাপতি জাকির হোসেন জানান, আমদানি-রফতানি হল শ্রমিকদের জীবিকা। এখন অনেকেই আয় হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ কানু ও সম্পাদক উত্তম সরকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে তাঁরা আশাবাদী এটা সাময়িক সমস্যা এবং প্রশাসনের উদ্যোগে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে। শুল্ক দফতরের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের নির্দেশ মেনেই কার্যক্রম চলছে। নতুন কোনও নির্দেশ এলেই তা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ততদিন সীমান্ত বাণিজ্যের গতি ধীরই থাকবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।