আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় গত ৯ অগস্ট। সেই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে গতকালই ফোনে কথা বলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে প্রকাশও করেন রাজ্যপাল। তবে এবার এরই মাঝে বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যপাল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অভিযোগ করলেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নির্যাতিতার মা-বাবার চেহারা প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, ধর্ষিতার নাম পরিচয় গোপন রাখতে হয়। এই আবহে ধর্ষিতার মা-বাবা, নিকট আত্মীয় কিংবা বাড়ির ঠিকানাও প্রকাশ করা যায় না। (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে ঝড়, এরই মাঝে বড় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের)
আরও পড়ুন: 'নজর ঘোরানোর চেষ্টা...', আরজি কর নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন রাহুল, তোপ BJP-র
গতরাতে কুণাল ঘোষ একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লেখেন, 'মাননীয় গভর্নর কীভাবে আরজিকরের ভিকটিমের বাবা-মায়ের মুখ দেখালেন? রাজভবন নিয়ম ও আইন লঙ্ঘন করে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। আমার কাছেও ভিডিয়ো এবং ছবি আছে। কিন্তু আমি তো তা ব্যবহার করছি না। রাজভবনের উচিত অবিলম্বে সেই পোস্টটি মুছে ফেলা।' (আরও পড়ুন: ফের রক্তে ভিজল তিলোত্তমার মাটি, সাতসকালে আনন্দপুরে উদ্ধার মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ)
আরও পড়ুন: সত্যি কি আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ? মুখ খুলল সিবিআই
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে পড়ুয়ারা, স্কুলে পড়ল 'খুনের হুমকি' দেওয়া পোস্টার
এদিকে আরজি কর নিয়ে অনেকেই নির্যাতিতার ছবি পোস্ট করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর নামও প্রকাশ করছেন। এমনকী তাঁর মৃতদেহের ছবি পর্যন্ত অসংবেদনশীল ভাবে শেয়ার করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতার ছবি ও নাম সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল আরজি করের ঘটনা নিয়ে শুনানি হয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতে। সেখানেই শীর্ষ আদালত এই নির্দেশ দেন। এমনিতেই ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট এক নির্দেশে জানিয়েছিল যে ধর্ষিতার নাম, ছবি প্রকাশ করা যাবে না। সদ্য কার্যকর হওয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৭২ নং ধারাতেও তা বলা হয়েছে। (আরও পড়ুন: বাজারে আলুর জোগান ঘিরে আশঙ্কা, আচমকাই বড় সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতার)
আরও পড়ুন: কবে জুড়বে এসপ্ল্যানেড ও শিয়ালদা মেট্রো? বড় আপডেট দিলেন KMRCL-এর নয়া এমডি
গতকাল শুনানি চলাকালীন এই নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'মৃত চিকিৎসকের নাম এবং ছবি যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মিডিয়ায়, তাতে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। তাঁর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের আগের বা পরের ছবি এবং ভিডিয়োও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট সবসময়ই বাকস্বাধীনতার পক্ষে। তবে একটা সীমা তো নির্ধারণ করা হবে। নয়া ন্যায় সংহিতাতেও এই নিয়ে ধারা উল্লেখ করা আছে। সুপ্রিম কোর্টও এর আগে এই নিয়ে রায় দিয়েছে।' শীর্ষ আদালত এই নিয়ে বলার পর রাজ্যের তরফের আইনজীবী কবিল সিব্বল সহমত পোষণ করে বলেন, 'আমরা এই ধরনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫০টি এফআইআর দায়ের করেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগে এই ছবিগুলি তোলা হয়েছিল। আমরা আর এরকম হতে দেব না।' এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এভাবে নির্যাতিতার ছবি প্রকাশ করে সম্মান প্রদর্শন করা যায়?'