গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে করণ জোহর পরিচালিত ছবি রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি। এই ছবির গল্পের অন্যতম লেখক হলেন একজন বাঙালি। নাম ইশিতা মৈত্র। ছবি মুক্তির পরই হিন্দুস্তান টাইমসের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। স্নেহা বিশ্বাসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই ছবির নানা অজানা বিষয় তুলে ধরেছেন।
রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে আলিয়া ভাট এবং রণবীর সিংকে। এছাড়া আছেন ধর্মেন্দ্র, শাবানা আজমি, জয়া বচ্চন, চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় এবং টোটা রায়চৌধুরী। এই ছবিতে শশাঙ্ক খৈতানের সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন ইশিতা। তিনি এই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন করণ জোহরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন বা সকলে তাঁকে যেমনটা ভাবে তার থেকে তিনি কতটা আলাদা।
বাঙালি হয়ে এই ছবির সংলাপ বা গল্প লেখার সময় কী কী জিনিস মাথায় রেখেছিলেন ইশিতা? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি দিল্লির বাঙালি। বাংলা ছাড়াও আমি পঞ্জাবি জানি, বলতে পারি। আমার মনে হয় এই জন্যই করণ আমায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন কারণ তিনি জানতেন আমি দুটো ভাষা বা জাতি দুটো চিনি, বুঝি। আমরা যাঁরা দিল্লিতে থাকি, তাঁরা বাড়িতে কথা বলার সয় দুটো বাক্য বাংলায় বললে পরেরটা এমনই হিন্দি বা ইংরেজিতে বলি। আর সেটাই আলিয়া বা এই ছবির রানির ক্ষেত্রেও হয়েছে। ফলে বাস্তবে যা হয়, যেমনটা হয় তেমনটা রাখার চেষ্টা করেছি।'
করণ জোহরের এই ছবিতে প্রথমবার দুটো জাতির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখানো হয়েছে, তো সেটাকে কীভাবে ব্যালেন্স করলেন? এই বিষয়ে ইশিতা বলেন, 'আমরা গতে বাঁধা ভাবনা ভাঙতে চেয়েছিলাম। এই ছবির প্রতিটা চরিত্র শুরুতে একে অন্যকে জাজ করত। রানি রকিকে জাজ করত, রানি পুনমের সম্পর্কটাও তাই। কিন্তু ধীরে ধীরে ওদের সবার মধ্যেই দারুণ একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আজকাল লোকজন ছবি না দেখেই বলে দেন কেমিস্ট্রি নেই, ওটা নেই, সেটা নেই। এই ছবির মাধ্যমে আমরা সেটাকেই চ্যালেঞ্জ করতে চেয়েছি।' তিনি আরও বলেন, 'আপনি যখন একটা মানুষকে চিনতে শুরু করবেন না তখন তাকে আর সহ্য করার বিষয় থাকে না, তাকে তার মতো করে মানুষ মেনে নেয় ভালোবাসা দিয়ে। আর একটা মানুষকে জানার পর বোঝা যায় সে আসলে কেমন।'
করণের থেকে বিশেষ কোনও নির্দেশ পেয়েছিলেন কী ইশিতা? 'না, কেবল কোনও ইনপুট উনি দেননি। উনি গোটা ছবির সমস্ত ডিপার্টমেন্টকে ধরে রেখেছিলেন। প্রতিটা সিন লেখার পর আমরা আলোচনা করতাম। ওঁর কোনটা ভালো লেগেছে, কোনটা খারাপ লেগেছে জানাতেন। একটা মাস্টার ক্লাসের মতো ছিল বিষয়টা' জানান এই ছবির চিত্রনাট্যকার।
ঈশিতার চোখে করণ জোহর কেমন মানুষ? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এই বিষয়ে আমি সবার আগে নেপোটিজমের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি এমন বহু মানুষকে চিনি জানি যাঁরা ধর্মা প্রোডাকশনের হয়ে কাজ করেছে, কিন্তু তাঁদের সঙ্গে স্বজনপোষণের কোনও সম্পর্ক নেই। আমি নিজে আর্মি পরিবারের মেয়ে। আমার যা পেশা এখন সেটা আমার পরিবারের কেউ ভাবতেও পারত না। আমি করণ জোহরের ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি আমার ট্যালেন্টের করে। সেখানে স্বজনপোষণের কোনও জায়গাই ছিল না।'
তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বলেন, 'আমার ভীষণ খারাপ লাগে যখন ওঁর বিষয়ে এমন কিছু শুনি। উনি কত অভিনেতা, পরিচালক, লেখককে সুযোগ দিয়েছেন বলুন তো? কিন্তু তাঁদের মধ্যে কতজন ফিল্মি পরিবারের? ওঁর সঙ্গে যা করা হয় সেটা খুবই অন্যায়। উনি আসলে ভীষণই ভালো মানুষ। যাঁরা ওঁকে চেনেন সবাই এটাই বলবেন।'