ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে ইরানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ উঠেছিল মাজিদ মোসায়েবির বিরুদ্ধে। সেই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল তেহরান। রবিবার এই দণ্ড কার্যকর হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে দেশটির বিচার বিভাগীয় সংস্থা ‘মিজান অনলাইন’। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইরানের সর্বোচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডের আদেশে সিলমোহর দেওয়ার পরই ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধ, ইরানের হামলার আবহে নিজেদের সরকারের বিরুদ্ধেই পথে ৪৫ হাজার ইজরায়েলি!
মোসায়েবির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি ইজরায়েলকে ‘সংবেদনশীল তথ্য’ সরবরাহ করতে চেয়েছিলেন। ইরান-ইজরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে ঠিক সেই সময় এই বিষয়টি সামনে আসে। ১৩ জুন ইরানের একাধিক পারমাণবিক ঘাঁটিতে ইজরায়েল সামরিক হামলা চালানোর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সঙ্ঘাত শুরু হয়। ইজরায়েল দাবি করেছে, তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইজরায়েলের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
এদিকে, পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশটিকে সতর্কবার্তা দেন। তারপরেই ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ঘাঁটি নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহানে বিমান হামলা চালায়।
নাতানজ সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রটি তেহরান থেকে প্রায় ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, অবস্থিত। ফোরদো কেন্দ্রটি রাজধানীর দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে এবং ইসফাহানের পারমাণবিক কেন্দ্রটি তেহরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এই হামলার পর ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘হয় শান্তি আসবে, নয়তো ইরানের জন্য এটি হবে চরম বিপর্যয়।’ এর পাল্টা জবাবে ইরানের বিদেশমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁর দাবি, পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং এনপিটি চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। মার্কিন হামলাকে তিনি ‘জঘন্য’ উল্লেখ করে বলেন, ‘এই হামলার পরিণতি দীর্ঘস্থায়ী হবে।’