যদি ধর্মান্তকরণ বন্ধ করা না হয় তবে দেশের সংখ্য়াগরিষ্ঠ লোকজনই একদিন সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। তবে এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণকে মানতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। কার্যত এই মন্তব্যকে স্বীকার করতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ একটি অর্ডার পাশ করেছেন। কৈলাশ নামে এক ব্যক্তির জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার সময় এই অর্ডার পাশ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে অনৈতিকভাবে তিনি ধর্মান্তকরণ করছেন।
তবে শীর্ষ আদালত তাকে জামিন দিয়েছে। তিনি ২০২৩ সালের ২১শে মে থেকে জেল হেফাজতে ছিলেন। ২০২৩ সালের ১৯শে জুলাই তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল।
বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছে, আমরা পরিষ্কার করে জানাচ্ছি যে হাইকোর্ট যে সাধারণ পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে, সেটার সঙ্গে বর্তমান মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। সেক্ষেত্রে যে পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে সেটা কোনওদিন কোনও কোর্টে ব্যবহার করা যাবে না।
২রা জুলাই হাইকোর্ট ওই মামলার ক্ষেত্রে অভিযোগপত্র অনুসারে জানতে পারে যে উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর থেকে ওই ব্যক্তি দিল্লিতে ধর্মান্তকরণের জন্য নিয়ে যেত। এরপরই তার জামিনের আবেদনের শুনানির সময় হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় যে যদি এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে তবে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ একদিন সংখ্যালঘু হয়ে যাবে।
এদিক এর আগে জোর করে ধর্মান্তকরণ নিয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্ট একটি নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টের তরফে বেশ জোরের সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল জোর করে ধর্মান্তকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এনিয়ে বিস্তারিত হলফনামা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের কাছে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল আদালতের তরফে। ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনের প্রয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে রাজ্যগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করে তা হলফনামার আকারে দেওয়ার জন্য় বলা হয়েছিল। বিচারপতি এমআর শাহ ও সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ জানিয়েছিল, জোর করে ধর্মান্তকরণ সংবিধান বিরোধী। আগামী ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় এনিয়ে একটি আবেদন করেছিলেন। তাঁর আবেদন ছিল প্রলোভন, ভয়, উপহারের কথা বলে ধর্মান্তকরণ বন্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে কেন্দ্রের তরফে আদালতে বলা হয়েছিল, ধর্মান্তকরণের ব্যাপারে রাজ্যগুলির কাছ থেকে তথ্য় চাওয়া হচ্ছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে তথ্য জোগাড় করার জন্য আমরা সময় চাইছি।
এদিকে কোর্টের তরফে জানানো হয়েছিল জোর করে ধর্মান্তকরণের বিষয়টি অত্যন্ত সিরিয়াস ম্যাটার।
পিটিআই সূত্রে খবর, এক আইনজীবী এই আবেদনের সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তখন বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এত টেকনিকাল হওয়ার দরকার নেই। আমরা সমাধান খুঁজতে চাইছি। একটি বিশেষ কারণে আমরা এখানে রয়েছি। যেটা ঠিক সেটা ঠিক করতে চাইছি আমরা। যদি দান ধ্যানের ব্যাপারটি লক্ষ্য ঠিক থাকে তবে তাকে স্বাগত, কিন্তু এটির উদ্দেশ্যটা আগে জানতে হবে।