নদিয়ার কালীগঞ্জে ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহত হয়েছে স্কুলছাত্রী তমন্না খাতুন। এই ঘটনার পর রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল আলোড়ন পড়ে যায়। ঘটনায় এখনও অধিকাংশ অভিযুক্ত অধরা। দোষীদের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছে পরিবার। এই আবহে তামান্নার পরিবার এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। সোমবার নিহত কিশোরীর মা সাবিনা বিবি অভিযোগ করেছেন, তাঁদের নিয়মিত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি খুনের হুমকি-সহ ফোনে মেসেজও আসছে বলে জানান তিনি। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর কাছে এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। (আরও পড়ুন: কসবা গণধর্ষণকাণ্ডে তদন্তে নয়া মোড়, আরও ৪ জনের ওপর নজর পুলিশের)
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জে বোমায় নাবালিকার মৃত্যুতে ধৃত মূল অভিযুক্তের ছেলে, তুঙ্গে তরজা
সোমবার সিপিএম নেতৃত্বের একটি প্রতিনিধি দল তামন্নার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। সাবিনা বিবি তাঁদের জানান, তাঁর মেয়েকে চোখের সামনে খুন করা হয়েছে। এখন তাঁদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘এখন বলছে আমাকে মারবে। আমার স্বামীকেও ছাড়বে না। ফোনে মেসেজ করে এইসব হুমকি পাঠাচ্ছে। প্রশাসনকে সব জানিয়েছি। আমরা আর কী হারাব? মেয়েকে তো হারিয়েই বসে আছি।’ কান্নাভেজা গলায় তিনি জানান, তাঁর একটাই দাবি, খুনিদের ফাঁসি হোক। (আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলায় আজ নবগ্রাম থানায় তলব কার্তিক মহারাজকে, হাজিরা কি দেবেন?)
বিমান বসু এদিন ঘটনাস্থল মোলান্দি গ্রামে গিয়ে তামন্নার মায়ের কাছ থেকে পুরো ঘটনার বিবরণ শোনেন। পরে বিমান বলেন, ২৪ জনের নাম পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৯ জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের কাউকে জেরা পর্যন্ত করা হয়নি। মূল অভিযুক্তকেও ধরা যায়নি। পুলিশ বলছে, সে গা-ঢাকা দিয়েছে! এমন হলে বিচার কীভাবে হবে? তাই নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন।
এদিনই স্থানীয়দের দাবি, গ্রামের পাটক্ষেত ও বাঁশবাগান থেকে বালতিভর্তি সকেট বোমা উদ্ধার হয়। পরে পুলিশ এসে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিমান বসু। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা জমিতে শ’য়ে শ’য়ে বোমা লুকিয়ে রেখেছে। বারবার বলার পরও পুলিশ কিছু করেনি। অবশেষে সাধারণ মানুষ নিজের ঝুঁকি নিয়ে বোমা খুঁজে বার করেছে, তাও পুলিশ সন্দেহ প্রকাশ করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন তামন্নার মৃত্যু হয়। তৃণমূলের উপনির্বাচনে জয় উদ্যাপনের সময় একটি বিজয়মিছিল থেকে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। সেই বোমার আঘাতে প্রাণ হারায় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামন্না। সে সিপিএম সমর্থক পরিবারের সদস্য ছিল। এরপর থেকেই পরিবারটি শাসকদলের হুমকির মুখে পড়ছে বলে দাবি উঠেছে। তামন্নার মা আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, আর কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর যদি সবাইকে ধরা না হয়, তাহলে তিনি অনশনে বসবেন।