পরিবেশ বাঁচানোর চেষ্টাটাই কাল হল শেষ পর্যন্ত। সামান্য প্ল্যাকার্ড লাগানোর উদ্যোগ নিতে গিয়ে কপালে মার জুটল। সংবাদমাধ্যমকে সামনে পেয়ে রীতিমতো হাতজোড় করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন চাপড়ার গভর্নমেন্ট জেনারেল কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে। কোন অপরাধে তাঁকে মার খেতে হল? অধ্যক্ষের অভিযোগ, তিনি কীটপতঙ্গের প্রজাতি রক্ষা নিয়ে কাজ করেন দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন স্থানে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে এই নিয়ে সচেতনতা প্রচার করে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি এমনই এক প্ল্যাকার্ড লাগানো নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের ভাইয়ের সঙ্গে বচসা হয়। বচসার সময় তাঁকে রীতিমতো মারধর করা হয়। ‘অ্যাটেম্পট টু মার্ডার ছিল ওটা’।
‘মণিপুর, নাগাল্যান্ডে আদিবাসীদের মধ্যে গিয়েও…’
এইচটি বাংলাকে শুভাশিষ জানান, ‘আমি সাড়া দেশ জুড়ে কাজ করেছি। মণিপুর, নাগাল্যান্ডের আদিবাসীদের মধ্যে গিয়েও কাজ করেছি। কিন্তু কোথাও এমন নিগ্রহের শিকার হইনি।’ অধ্যক্ষকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের পর চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসার পর চাপড়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগপত্রে লেখেন, ‘যদি আমাকে মেরেও ফেলেন, তবু ওই জায়গাটি বাঁচান। পরিবেশ বাঁচানোর জন্য এটা দরকার।’
আরও পড়ুন - প্রেমিকা সেজে বাসস্ট্যান্ডে এলেন প্রেমিকার হবু বৌদি! দেখা করতে গিয়ে ফাঁসলেন যুবক
কী বলছে পুলিশ ও জেলা তৃণমূল?
তবে জেলা তৃণমূল ও পুলিশের কথায় অধ্যক্ষকে মারধর করা হয়নি। একটু ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল। কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক তৃণমূল কংগ্রেস জেলার চেয়ারম্যান তথা চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রুকবানুর রহমান এই সময় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মারধর মোটেই করা হয়নি। ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল দুজনের মধ্যে। যদি সত্যিই মারধর করা হয়, তাহলে পুলিশকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকওয়ানা মিতকুমার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কলেজের অধ্যক্ষকে একজন ধাক্কা মেরেছে বলে চাপড়া থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন - ‘মাতৃভাষা বাংলা বলে…’ বাংলাদেশী সন্দেহে বাংলার শ্রমিকদের পরপর আটক, ওড়িশা সরকারকে কড়া চিঠি দিল নবান্ন
‘অটোওয়ালা আমাকে না বাঁচালে…’
জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ও পুলিশের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অধ্যক্ষ HT বাংলাকে জানান, ‘পুরোপুরি মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে। এই কথা বলা মানে দোষীদের আড়াল করা। অকুস্থলে সেদিন চেকপোস্টের বিএসএফ-এর চারজন উপস্থিত ছিল। তাদের জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল না মারা হয়েছিল। রীতিমতো অ্যাটেম্পট টু মার্ডার ছিল। অটোওয়ালা শেষ মুহূর্তে আমাকে না বাঁচালে আজ ফোনে কথা বলতে পারতাম কি না জানি না।’