2 মিনিটে পড়ুন Updated: 14 May 2023, 07:30 PM ISTAyan Das
ঘূর্ণিঝড় মোখার জেরে তছনছ হয়ে গেল বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। গাছে চাপা পড়ে প্রায় ১১ জন আহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে অসংখ্য গাছ উপড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য অস্থায়ী ছাউনি। উড়ে গিয়েছে বাড়ির টিনের চাল।
ঘূর্ণিঝড় মোখায় তছনছ হল সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। (ছবি সৌজন্যে এএফপি)
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার দাপটে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল বাংলাদেশের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাছে চাপা পড়ে একজন আহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে অসংখ্য গাছ উপড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে অসংখ্য অস্থায়ী ছাউনি। উড়ে গিয়েছে বাড়ির টিনের চাল। ১,০০০-র বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। তবে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই স্পষ্ট নয়। আগামী কয়েকদিনে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। তারইমধ্যে আবহাওয়া অধিদফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামিকাল সেন্ট মার্টিন দ্বীপ-সহ বাংলাদেশে বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। স্বস্তির বিষয় একটাই যে বাংলাদেশের উপকূল পেরিয়ে গিয়েছে মোখা। পরিণত হয়েছে নিম্নচাপে।
ঘূর্ণিঝড়ের মোখার দাপটে যে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে, সেই আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। অনেকে তো আশঙ্কা করেছিলেন যে প্লাবিত হয়ে যাবে প্রবাল দ্বীপ। সেই পরিস্থিতিতে আগেভাগেই প্রচুর মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র এবং বিভিন্ন শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সকাল বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের যত কাছে মোখা এগিয়ে আসতে থাকে, তত তাণ্ডব শুরু হয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। রাস্তা কার্যত জনমানবশূন্য হয়ে যায়। আকাশ কালো হয়ে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে। যাঁরা সকালে শিবিরে এসেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, ঝড়ের বেগ এতটাই ছিল যে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যাচ্ছিল না। প্রচুর টিনের বাড়ির চাল উড়ে গিয়েছে। রাস্তায়-রাস্তায় প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছিল।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিকেল চারটে থেকে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। প্রায় এক ঘণ্টা সেরকম ঝড়-বৃষ্টি হয়। অনেকেই জানিয়েছেন, হাওয়ার দাপট এতটাই ছিল যে ঘরের মধ্যে বসে থাকলেও গাছপালা ভেঙে পড়ার আওয়াজ আসছিল। শো-শো করে ঝড়ের হাওয়া শুনতে পাওয়া যাচ্ছিল। বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৪০০ গাছ ভেঙে গিয়েছে। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মহম্মদ শাহিন ইমরান সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আপাতত যা খবর মিলেছে, তাতে ১,২০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবহাওয়া একটু ভালো হলেই উদ্ধারকাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম অনুযায়ী, দুপুরেই সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ আকতার কামাল জানিয়েছেন যে আশপাশের সব জিনিসকে তছনছ করে দিয়েছে মোখা। এখানেই সবথেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন তিনি। তবে কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই নির্দিষ্টভাবে বলা যাবে না বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। তাঁদের মতে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে আরও সপ্তাহখানেক লেগে যেতে পারে।
তারইমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে খবর ছড়িয়েছিল। তবে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম কালের কণ্ঠের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন যে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মহম্মদ শাহিন ইমরান সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যে আপতত হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।