গুরুতর অসুস্থ প্রবীণ অভিনেতা প্রবীর মিত্র। ফুসফুসের সমস্যা, শরীরে অক্সিজেন স্বল্পতা-র মতো সমস্যা নিয়ে গত ২২ ডিসেম্বর অভিনেতাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নতুন বছরে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি আরও বিগড়েছে। আরও পড়ুন-চোখে চোখ,হাতে হাত! রোজার ছন্দের মুগ্ধতায় কাটবে জীবন, ২য় বিয়ে সারলেন মিথিলার প্রাক্তন স্বামী
শনিবার অভিনেতার পুত্র সিফাত ইসলাম প্রথম আলো সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বাবা শরীরে অক্সিজেন পাচ্ছিল না। এরপর আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কেবিনে দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। খারাপ অবস্থার দিকে। ব্লাড লস হচ্ছে, প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছে।’
৮৩ বছর বয়সী প্রবীর মিত্রর জন্ম ১৯৪৩ সালের ১৮ অগস্ট কুমিল্লার চান্দিনায়। তাঁর পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছবির দুনিয়ার তাঁর পথচলা শুরু প্রয়াত এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে মাধ্যমে। ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। ৫৫ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে প্রবীর মিত্র ‘নায়ক’ হিসেবে হাতেগোনা ছবিতে অভিনয় করেছেন, যার অন্যতম ঋত্বিক ঘটকের তিতাস একটি নদীর নাম।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ রচিত উপন্যাস তিতাস একটি নদীর নাম অবলম্বনে এই ছবি তৈরি করেছিলেন ঋত্বিক। সেখানে কিশোরের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন প্রবীর মিত্র। বাংলা চলচ্চিত্রের এক দলিল হয়ে রয়েছে ঋত্বিক ঘটকের এই ছবি।
এরপর চরিত্রাভিনেতা হিসেবে কাজ করেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রবীর মিত্র। ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সেয়ানা’, ‘জালিয়াত’, ‘ফরিয়াদ’, ‘রক্ত শপথ’, ‘চরিত্রহীন’, ‘জয় পরাজয়’, ‘অঙ্গার’, ‘মিন্টু আমার নাম’, ‘ফকির মজনু শাহ’, ‘মধুমিতা’, ‘অশান্ত ঢেউ’, ‘অলংকার’, ‘অনুরাগ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘তরুলতা’, ‘গাঁয়ের ছেলে’, ‘পুত্রবধূ’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি রয়েছে তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে। গৌতম ঘোষের শঙ্খচিল ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন প্রবীর মিত্র।
আরও পড়ুন-এক ছাদের তলায় থাকেন না গোবিন্দা-সুনীতা! বিয়ের ৩৭ বছর পর আচমকাই দূরত্ব দাম্পত্যে?
প্রবীর মিত্রের স্ত্রী অজন্তা মিত্র ২০০০ সালে মারা গেছেন। গত ২৫ বছর ধরে নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছেন অভিনেতা। গত ৫-৬ বছর শোবিজ জগত থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন প্রবীর মিত্র। অভিনেতার এক মেয়ে ও তিন ছেলে। ছোট ছেলের মৃত্যুশোকও বইতে হয়েছে তাঁকে, ২০১২ সালে ৭ মে মারা যায় অভিনেতার ছোট ছেলে।