পহেলগাঁওতে চলতি বছরের এপ্রিলে ভয়াবহ জঙ্গি হানার পরই পাকিস্তানের বুকে ৯ জঙ্গি ঘাঁটিতে আছড়ে পড়েছিল ভারতীয় সেনার ‘অপারেশন সিঁদুর’র অভিযানের হানা। গুঁড়িয়ে গিয়েছিল বহু পাকিস্তানি জঙ্গি ঘাঁটি। সেই ঘটনার পর পার হয়েছে বহু সপ্তাহ। সদ্য ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন,'অপারেশন সিঁদুর শেষ হয়নি'। এই প্রেক্ষাপটে এবার জম্মুর রজৌরি সেক্টর দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল একদল জইশ জঙ্গি। সতর্ক ভারতীয় সেনার তৎপরতায় রুখে যায় অনুপ্রবেশ।
জম্মু ও কাশ্মীরের অন্তর্গত রজৌরিতে অবস্থিত রয়েছে গম্ভীর নামের এলাকা। এলাকাটি পাকিস্তানি সীমান্তের কাছেই অবস্থিত। জানা গিয়েছে সেখান দিয়েই রবিবার সশস্ত্র জইশ জঙ্গিরা ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এরপরই জবাব দিতে থাকে ভারতীয় সেনা। সেনার তরফে বলা হয়েছে,' সতর্ক সেনাদের দ্রুত এবং সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের ফলে একজন গুরুত্বপূর্ণ গাইডকে আটক হয়, যার ফলে অনুপ্রবেশের প্রচেষ্টা কার্যকরভাবে ব্যাহত হয় এবং অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীদের আহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।'
যে গাইডকে আটক করা হয়েছে, সে পাকিস্তানি। আর সেই খবর নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সেনা। সেনা জানিয়েছে, ধৃত গাইডের নাম মহম্মদ আরিব আহমেদ। আরিবের বাবা ইউসুফ পাকিস্তানের কোটলি এলাকার নিকিয়ালের বাসিন্দা। প্রসঙ্গত এই কোটলির নিকিয়াল এলাকা পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অবস্থিত। আর সেখানেরই বাসিন্দা ধৃত পাকিস্তানি গাইড। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে,'সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেনাবাহিনী, বিএসএফ-এর সাথে, রবিবার একটি সু-সমন্বিত অনুপ্রবেশ বিরোধী অভিযান শুরু করে, যার হাত ধরে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে সন্ত্রাসীদের ঠেলে পাঠানো হয়েছে। সতর্ক বাহিনী ….চার থেকে পাঁচজনের একটি ভারী সশস্ত্র ব্যক্তির সন্দেহজনক গতিবিধি শনাক্ত করে।' সেনা বলছে এই সন্ত্রাসীরা রীতিমত কঠিন ভূভাগের রাস্তা ধরে ও ‘ঘন পাতায় ছাওয়া এলাকার সুবিধা নিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।’ সেনা
এদিকে, শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। তার আগে এই জঙ্গি অনুপ্রবেশ রোখা সেনার কাছে একটি বড় সাফল্য। তবে জানা গিয়েছে, গোটা এলাকায় চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়ে গিয়েছে। এদিকে, এই জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টা ঘিরে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু সংবেদনশীল নথি। তার মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন, পাকিস্তানি টাকা। জানা গিয়েছে, ওই ধৃত গাইডকে জেরা করতেই জানা গিয়েছে সে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দা। যে এলাকা ভারত-পাক সীমান্তের খুবই কাছে অবস্থি সেখানেই তার বসবাস।
ওই জেরাতেই জানা গিয়েছে, জইশ জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকতে মজুত করার মতো কিছু জিনিস ছিল, সঙ্গে ছিল অস্ত্র। উল্লেখ্য, সদ্য ‘এনডিটিভি’র এক রিপোর্টে দাবি করা হয় যে, পাকিস্তানে অপরাশন সিঁদুর যে জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল, সেগুলি আবার নির্মাণ হতে শুরু করেছে। পিওকের বুকেও জঙ্গি লঞ্চপ্যাড নিয়ে সক্রিয়তা দেখা গিয়েছে বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়।