সোমবার সকাল হতেই ভোগান্তির ছবি ধরা পড়ল হাসনাবাদ-শিয়ালদা শাখায়। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ভাসিলা স্টেশনে রেল অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনে পৌঁছনোর রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। বর্ষাকালে সেই পথ হয়ে ওঠে আরও বিপজ্জনক। মাটি ধসে যায়, কাদা জমে, কোথাও পা রাখা যায় না। এর জেরেই ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। বারবার অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও জেলা প্রশাসন কিংবা রেলের পক্ষ থেকে কোনও স্থায়ী সমাধান হয়নি বলেই ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই এদিন সকাল থেকে লাইনের উপর বসে পড়েন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: ট্রেন চলাচলে বাধা দিলেই কড়া শাস্তি, অবরোধ নিয়ে ১৯৮৯ সালের আইন মনে করাল রেল
এদিন অবরোধের জেরে থমকে যায় ট্রেন চলাচল। দাঁড়িয়ে পড়ে একের পর এক লোকাল ট্রেন। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, অবরোধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আটকে পড়ে কমপক্ষে আটটি ট্রেন। যাত্রীদের মধ্যে শুরু হয় চরম ক্ষোভ। সকাল-সকাল অফিস যেতে না পেরে সমস্যায় পড়েন কর্মজীবী মানুষ। স্কুল-কলেজগামী পড়ুয়াদেরও দেখা যায় বিভ্রান্ত অবস্থায়।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলের আধিকারিকেরা। তাঁরা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। এই আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে অবশেষে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা। তবে ততক্ষণে ট্রেন চলাচলে বেশ প্রভাব পড়েছে। একাধিক ট্রেন চলে দেরিতে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, অবরোধের জেরে আপ ও ডাউন মিলিয়ে আটটি ট্রেন দেরিতে চলছে এবং একটি বারাসাত-হাসনাবাদ লোকাল বাতিল করতে হয়েছে। সব ট্রেন সময়ের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। যাত্রীদের যাতে আর সমস্যা না হয়, তার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তবে এখনও ট্রেন পুরোপুরি সময়মতো চলছে না। প্রতিটি ট্রেনই চলছে ধীরগতিতে। রেল জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও পরিষেবা স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। দুপুর নাগাদ সব কিছু স্বাভাবিক হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, রাতভর টানা বৃষ্টির ফলে সকাল থেকেই দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরা। শহরের বিভিন্ন অংশে জমেছে জল, রাস্তায় নেমে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ট্রেনের দেরি, বাতিল ট্রেন এবং সময়ের অনিশ্চয়তা। দু’য়ে মিলে কার্যত নাকাল অবস্থা যাত্রীদের।