পাহাড় ঘেরা ঘন জঙ্গলে প্রবেশ করে গিয়েছে বাঘিনী জিনাত। গোটা পুরুলিয়ায় ঘটনা ঘিরে আতঙ্কের রেশ। এদিকে, পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড় ও তার সংলগ্ন কুইলাপাল জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘিনী জিনাত। তাকে মোষ, ছাগলের পর শুয়োরের টোপ দিলেও, সে টোপকে ধর্তব্যেই আনছে না জিনাত। সিমলিপাল থেকে চাকুলিয়া তারপর ঝাড়গ্রাম থেকে সোজা জঙ্গলের পথ বেয়ে সে ঢুকে পড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরুলিয়ার পাহাড়ি জঙ্গল এলাকা। এদিকে, এলাকাবাসী ও বাঘিনী জিনাত, দুই তরফের নিরাপত্তা ও সুস্থতা বজায় রাখতে এক ফোঁটাও তৎপরতায় ছাড় দিচ্ছে না প্রশাসন। অন্যদিকে, জিনাতকে সুস্থভাবে সিমলিপালের জঙ্গলে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বনদফতরও সমানভাবে সক্রিয়। তবে আপাতত, জিনাত অধরা।
পুরুলিয়ায় জঙ্গলে জোর কদমে চলছে বাঘবন্দি খেলা। জিনাতকে ঘরে ফেরাতে মুখিয়ে রয়েছে বনদফতর। রবিবার রাতভর বনদফতরের বিশেষ ট্র্যাঙ্কুলাইজার টিম হাজির ছিল এলাকায়। সঙ্গে ছিল, স্যাটেলাইট মনিটারিং, থার্মাল ইমেজ স্ক্যানিংর ব্যবস্থা। নাইট ভিশন ড্রোন মনিটারিং দিয়ে জিনাতের চলার পথে নজর রেখেছে বনদফতর। তবে বাঘিনীও একচুল টোপে পা দেয়নি। সন্তর্পণে সে নিজের পথে এগিয়ে গিয়েছে। আর তাতেই চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে বনদফতরের। বাঘিনীর অবস্থান বুঝে বনদফতরও ফাঁদ পাতার চেষ্টা করছে।
এদিকে, রাইকা পাহাড় ও জঙ্গলঘেরা এলাকা, পুরুলিয়ার কেশরা, কায়রা, সাগেড়ি, লেদাশাল, চিরুগাড়ু, বারুডি সহ একাধিক জায়গার মানুষকে সতর্ক করেছে বনদফতর। সতর্ক করেছে পুলিশ প্রশাসনও। ওড়িশার সিমলিপাল রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে পুরুলিয়ায় এসেছে ১৫ জনের বিশেষ টিম। সেই টিম জিনাতকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছে। পুরুলিয়ার ডিএফও অঞ্জন গুহ বলছেন,' জঙ্গলে জিনাত সুস্থ রয়েছে। সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কোনও কার নেই। জনসাধারণ এবং বাঘিনী, উভয়ের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই জন্য সমস্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে বনদফতরের পক্ষ থেকে।' তিনি অনুরোধ করছেন, ‘দয়া করে গুজব রটাবেন না। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি ওকে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার।’ প্রসঙ্গত, জিনাতকে সিমলিপালে জিনাতকে আনা হয়েছিল মহারাষ্ট্রের অন্ধেরি-তাবোড়ার জঙ্গল থেকে। সিমলিপালের জঙ্গলের টাইগার রিজার্ভে মন বসেনি জিনাতের। ১৫০ কিলোমিটারের রাস্তা পার করে সে মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া জঙ্গলে আসে। এরপর ঝাড়গ্রাম হয়ে পুরুলিয়া। আপাতত জিনাতকে ঘিরে টানটান সাসপেন্স রয়েছে জারি।