দু’টি রাজ্যের সীমান্ত। একদিকে ঝাড়খণ্ড, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম। ঠিক এই সীমানাতেই ঘটে গেল এক রুদ্ধশ্বাস ঘটনা। সোনার গয়না লুট করে পালানোর সময় বাংলার পুলিশের তৎপরতায় ধরা পড়ল পড়শী রাজ্যের দুই দুষ্কৃতী। তৃতীয় জন এখনও পলাতক।
আরও পড়ুন: ডোমজুড়ে ডাকাতিতে বিহারের সুবোধ গ্যাং! প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে দাবি পুলিশের
ঘটনার সূত্রপাত ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার চাকুলিয়া থানার একটি সোনার দোকানে। দোকান খুলতেই সেখানে চড়াও হয় তিন দুষ্কৃতী। বন্দুকের ভয় দেখিয়ে গয়না লুঠ করে তারা। পুলিশের হিসেব অনুযায়ী, লুঠ হওয়া সোনার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। দুষ্কৃতীরা এরপর মোটরবাইকে করে পাড়ি দেয় সীমান্ত পেরিয়ে বাংলার দিকে। তাদের লক্ষ্য ছিল জামবনি হয়ে সোজা অন্যত্র পালিয়ে যাওয়া। কিন্তু বিষয়টি অল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যায় জামবনি থানার পুলিশের কাছে। ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেই সীমান্তে সতর্কতা জারি করে জামবনি থানার পুলিশ।
জামবনি থানার ওসি অভিজিৎ বসু মল্লিক এবং আরটি অফিসার এএসআই অসীম মণ্ডলের নেতৃত্বে শুরু হয় রাতেই অভিযান। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নজরদারি শুরু হয়। তখন ঘড়ির কাঁটা রাত ন’টার কাছাকাছি। ঠিক সেই সময় পুলিশের চোখে পড়ে এক মোটরবাইকে তিন ব্যক্তি যাচ্ছেন দ্রুত গতিতে। তাদের থামার নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনওরকমে বাইকের গতি বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে তারা। পুলিশ তখন আর দ্বিধা করেনি। শুরু হয় পিছু ধাওয়া। প্রায় ১ কিমি রাস্তা বাইক ধরে তাড়া করে শেষমেশ ধরে ফেলা হয় দুই অভিযুক্তকে। তৃতীয় জন অন্ধকারে গা ঢাকা দেয়।
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি ব্যাগভর্তি সোনার গয়না। প্রাথমিক তদন্তেই নিশ্চিত হয় পুলিশ এটাই লুট হওয়া গয়না। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম নিরঞ্জন গৌর (ঝাড়খণ্ডের জুগসালাই এলাকার বাসিন্দা) এবং মহম্মদ রফিক (বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলার বাসিন্দা)।এই সফল অভিযান প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা জানিয়েছেন, ধৃতদের ঝাড়খণ্ড পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। লুট হওয়া সব গয়না উদ্ধার হয়েছে। যাঁরা এই গোটা অভিযানে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের জেলা পুলিশের তরফে পুরস্কৃত করা হবে।