বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল চারজনের। এদের মধ্যে বাবা–মা সহ তাঁদের দুই বাচ্চাও ছিলেন। রাতে গাড়ি করে ফেরার সময় পুকুরে পড়ে যায় গাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দারা তখন ছুটে এসে উদ্ধার করে তাঁদের। আর তখন কোচবিহার মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আজ, সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। মৃত দু’জন স্বামী–স্ত্রী আর তাঁদের বাচ্চা দু’জন। তাঁরা শিক্ষকতা করতেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই সন্তানকে নিয়ে বিয়েবাড়ি গিয়েছিলেন শিক্ষক দম্পতি। আর সেখান থেকে ফেরার পথেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পুকুরে গাড়়ি পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল দম্পতি এবং তাঁদের দুই সন্তানের। রবিবার রাতে মর্মান্তিক এই পথ দুর্ঘটনা ঘটেছে কোচবিহারে বানেশ্বর এলাকায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি পড়ে যায় রাস্তার ধারে পুকুরে। তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি এলাকায় বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে এই পথ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত এই শিক্ষক দম্পতি কোচবিহার ২ নম্বর ব্লকের সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় থাকতেন। বিয়ে বাড়ি থেকে রাতে তাঁরা নিজেদের গাড়িতে ফিরছিলেন। তখন অন্ধকারে দেখতে পাননি এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বিজিবি–বিএসএফের শুভেচ্ছা বিনিময়, বিজয় দিবসে মিষ্টি দিয়ে সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখল
পুলিশ সূত্রে খবর, সঞ্জিত রায় (৩৫) ও বিপাশা সরকার রায় (৩৩) পেশায় স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকা। তাঁদের বাড়ি কোচবিহারের বাণেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাওয়ারগঞ্জ এলাকায়। রবিবার রাতে তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লক এলাকায় ওই পরিবারের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ ছিল। শিক্ষক দম্পতি তাঁদের দু’বছরের ছেলে ইভান এবং পাঁচ বছরের মেয়ে ইশশ্রীকে নিয়ে সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়েছিলেন। রাতে তাঁরা নিজেদের গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই এই মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা ঘটে। নিজেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন সঞ্জিত বাবু। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কালভার্টের উপর থেকে গাড়িটি পাশের পুকুরে পড়ে যায়। তখনই সব শেষ হয়।
এছাড়া বিকট শব্দ পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। আর চারজনকে দ্রুত উদ্ধার করে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।৷ যদিও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা চারজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থলে আসে পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। শিক্ষক দম্পতি ও তাঁদের দুই শিশুসন্তানের মর্মান্তিক পরিণতি মেনে নিতে পারছেন না পড়শিরা। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ কালজানি হেরিটেজ এলাকার রাস্তা দিয়ে গাড়িটি যাচ্ছিল। গাড়িটি দ্রুত গতিতে থাকায় সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের পুকুরে পড়ে যায়। কাচ ভেঙে গাড়ির ভিতর থেকে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। সঞ্জিত ঘোষ নাটাবাড়ি হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। বিপাশা সরকার রায় ছিলেন নাটাবাড়ি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য পরিমল বর্মণ বলেন, ‘মর্মান্তিক ঘটনা। পথ দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।’