নদিয়ার চাপড়ায় কলেজ চত্বরে পরিবেশ সচেতনতামূলক বোর্ড লাগানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কর্মীর হাতে আক্রান্ত হলেন অধ্যক্ষ। ঘটনায় আতঙ্কে ভেঙে পড়ে চাকরি ছেড়ে দিতে চাইছেন তিনি। সবার সামনে কাঁদতে-কাঁদতে বলেন, হয় তাঁকে বদলি করা হোক, না হলে চাকরি ছেড়ে দেবেন।
আরও পড়ুন: একইদিনে কাটোয়া কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকার ওপর দুষ্কৃতী হামলা, তদন্তে পুলিশ
জানা যাচ্ছে, ২০২১ সাল থেকে চাপড়া গভর্নমেন্ট জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে পরিবেশ রক্ষা ও কীটপতঙ্গ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন। অভিযোগ, সরকারি জায়গা ও রাস্তার ধারে লাগানো গাছ কেটে ঝোপঝাড় সাফ করছে এক শ্রেণির মানুষ। সেই কাজ রুখতেই কলেজ সংলগ্ন এলাকায় সচেতনতামূলক বোর্ড লাগান অধ্যক্ষ। কিছুদিনের মধ্যেই সেই বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর বুধবার নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষ বোর্ডগুলি মেরামত করতে গেলে এক ব্যক্তি তাঁকে প্রশ্ন করে, কার অনুমতিতে এই বোর্ড লাগিয়েছেন? তারপরই নিরাপত্তারক্ষীর সামনেই অধ্যক্ষকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
অধ্যক্ষের দাবি, যিনি মারধর করেছেন, তাঁর নাম অজয় ঘোষ। তিনি তৃণমূল কর্মী। আর তাঁর ভাই হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। অধ্যক্ষ বলেন, গাছ কেটে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ভাঙার পর প্রতিবাদ করায় তাঁকেই মার খেতে হল। এই পরিস্থিতিতে তিনি এই কলেজে চাকরি চালিয়ে যেতে পারছেন না।
ঘটনার পরে তাঁকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযুক্ত অজয় ঘোষ মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, মানসিকভাবে তখন ঠিক ছিলেন না। উত্তেজনার বশে মারধর করেছেন। সেখানে তাঁর বাবাও থাকত, তাঁকে মারতেন।
ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে অধ্যক্ষের অভিযোগ, অভিযুক্ত এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও এখনও পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি জমি জবরদখল করতেই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। আর বাধা দিলেই তৃণমূল কর্মীরা হামলা করছে। এখন প্রশ্ন, একজন অধ্যক্ষ যদি কলেজে নিরাপদ না থাকেন, তাহলে বাকিরা কতটা সুরক্ষিত?